শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫


ইজতেমা থেকে কী নিয়ে ফিরব?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| আরাফাত নুর ||

আমরা মুসলমান। আমাদের গর্বের ধর্ম ইসলাম। ইসলাম শান্তির ধর্ম। যুগে যুগে নবী-রাসুলেরা এই শান্তির বাণী সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমান তাবলিগ জামাতও এই কাজটি করছে। বিশ্বব্যাপী ইসলামের শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিচ্ছে।

প্রতিবারের মতো এবারও টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইজতেমা। আল্লাহপ্রেমিকরা দিকদিগন্ত থেকে আকুল প্রাণ ও ব্যাকুল হৃদয়ে হাজির হয়েছেন ইজতেমার মাঠে। মনজিলে মাকসাদ যাদের আখেরাত, পৈত্রিক বাসস্থান যাদের জান্নাত, অন্তরের চাওয়া যাদের মুসলিম উম্মাহর হেদায়াতÑ এমন এক কাফেলায় কে না শরিক হতে চায়, কে না যেতে চায় এমন কাফেলার মহা ইজতেমায়।

আসুন! ভেবে দেখি, ইজতেমার পবিত্র আয়োজন থেকে কী নিয়ে ফেরা যায়।

ঈমান, আমল, সুন্নতে নববির প্রশিক্ষণ ও মশকি মেহনতের মাঠ হচ্ছে তুরাগ তীরের এই বিশ^ ইজতেমা। তাই এই ময়দান যেন শুধু যাওয়া আর আসা না হয়। এজন্যেই যেসব জিনিস এই ইজতেমা থেকে নেওয়ার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তা নিজের জীবনে বাস্তবায়নের বজ্রকঠোর শপথ করতে হবে। এমন কয়েকটি প্রধান-প্রধান বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হলো-

১. একনিষ্ঠ বিশ^াস: এক আল্লাহর সত্তার ওপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস এবং তার ওপরই আস্থা রাখতে হবে। তিনি ছাড়া আর কেউ কিছুই করতে সক্ষম নাÑএমন বিশ^াস নিয়ে যেন ইজতেমার মাঠ থেকে ফিরতে পারি।

২. সুন্নতের অনুসরণ: রাসুল সা. এর আনীত দীন-ইসলামের প্রতি পূর্ণ ঈমান এবং তিনিই শেষ নবী। তাঁর পর আর কোনো নবী ও ধর্ম আসবে নাÑ এ কথার ওপর পূর্ণ বিশ^াস রাখা। সেই সঙ্গে তাঁর সুন্নতের পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে অনুসরণ এবং একমাত্র তাঁর তরিকার ওপরই এ মুসলিম জাতির মুক্তিÑ একথার ধ্যান-জ্ঞান করা।

৩. দীন প্রচার: দীন ইসলামের সম্মানে, মুসলিম জাতির কল্যাণে নিজের জান মাল সময় সবকিছু দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা। দীনের তাবলিগে নিজের সবকিছুকে কুরবানি দেওয়া। মুমিন মুসলমান এবং বেদীন সবধরনের মানুষের কাছে ঈমান, ইয়াকিন এবং দীনের ব্যথা নিয়ে কালেমার দাওয়াত দেওয়া। মনে মনে একথার বিশ^াস রাখা আল্লাহ চাহেতো সে আমার দাওয়াত কবুল করবে।

৪. কুরআন তেলাওয়াত ও জিকির: ইজতেমার সময় এবং তার পরে পুরো জিন্দেগিতে এই দুটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা। কেননা, কুরআন তেলাওয়াতে অন্তরের অন্ধকার দূর হবে এবং জিকিরের দ¦ারা প্রশান্তমনের অধিকারী হওয়া যাবে।

৫. সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ: সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজে নিষেধ করা। কেননা এই দুটি বিষয়ই হলো দুনিয়ার ব্যবস্থাপনা ঠিক থাকার মূল চালকাশক্তি।

৬. ঐক্য ও প্রাধান্য: মুসলিম উম্মাহর একতা, বন্ধুত্বতার ওপর গুরুত্বারোপ করা। কেননা, সব মুসলিম ভাই-ভাই। সারা দুনিয়ার মুসলমানেরা এক ভূখণ্ড, এক শরীরের অধিকারী। তাদের সাদা-কালো দেশি-বিদেশি কোনো ভেদাভেদ নেই। অন্য বিষয়টি হলো ইসারেদানি। অর্থাৎ নিজের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দেওয়া। অন্য মুসলমান ভাইয়ের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি লক্ষ্য রাখা।

৭. ইস্তেসফার ও জিকিরে ফিকিরে থাকা: সবসময় আল্লাহর দরবারে নিজের ভুল-ভ্রান্তির জন্য তওবা-ইস্তেগফারে মগ্ন থাকা এবং অযথা কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকা। সবসময় উম্মতে মুহাম্মাদির দুরবস্থা, তাদের হেদায়েত এবং মৃত্যুপরবর্তী জীবনের কথা চিন্তা করে জিকিরে ফিকিরে মগ্ন থাকা।

লেখক: মাদরাসা শিক্ষার্থী

কেএল/


সম্পর্কিত খবর