বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
এক লাফে ভরিতে ৮৩৮৬ টাকা কমল স্বর্ণের দাম জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী ১৮তম জাতীয় তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ২০ ও ২১ নভেম্বর ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী ইহুদিদের চিঠি  গণভোট নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জটিলতা তৈরির অভিযোগ জামায়াতের ‘পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ চিকিৎসকদের  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার

বন্ধু নির্বাচনে ইসলামের নির্দেশনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বন্ধু—এই শব্দটি যেমন হৃদয়স্পর্শী, তেমনি জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম বন্ধুত্বকে কেবল সামাজিক সম্পর্ক হিসেবে দেখেনি, বরং তা ঈমান ও আখিরাতের সাফল্যের সঙ্গে জড়িত বলে বিবেচনা করেছে। সঙ্গী-সাথির প্রভাব মানুষকে জান্নাত কিংবা জাহান্নামের দিকে টেনে নিতে পারে—এমনই ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরেছে ইসলাম।

কুরআন ও হাদীসে স্পষ্ট নির্দেশনা

কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন—

“সেদিন (কিয়ামতের দিন) বন্ধুরা একে অপরের শত্রু হয়ে যাবে, তবে মুত্তাকিরা (আল্লাহভীরুরা) ব্যতিক্রম।”(সূরা যুখরুফ: ৬৭)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন—

“মানুষ তার বন্ধুদের দ্বীনের ওপর থাকে। কাজেই তোমাদের কেউ যেন দেখে, সে কাকে বন্ধু বানাচ্ছে।”(তিরমিজি, হাদীস: ২৩৭৮)

অর্থাৎ যার সঙ্গে আপনি সময় কাটাচ্ছেন, তার বিশ্বাস ও কর্মপদ্ধতি একসময় আপনার মধ্যেও স্থান করে নেবে। তাই ইসলাম বন্ধুর চরিত্র, ধর্মীয় অবস্থান ও আমলের মান বিবেচনায় এনে বন্ধুত্ব গড়ার নির্দেশ দেয়।

ভালো বন্ধু সেই, যে আপনাকে আল্লাহর পথে টেনে নিয়ে যাবে। রাসুলুল্লাহ ﷺ ভালো বন্ধুর উদাহরণ দিয়ে বলেন:“ভাল বন্ধুর উদাহরণ হলো আতর বিক্রেতার মতো। সে না হয় তোমাকে আতর উপহার দেবে, না হয় তুমি তার কাছ থেকে কিনবে, কিংবা অন্তত তার সুন্দর গন্ধ পাবে।”(বুখারি ও মুসলিম)

সৎ বন্ধু মানুষের মনুষ্যত্ব ও দ্বীনদারি দৃঢ় করে। দুনিয়া ও আখিরাতে সে এক অপরের জন্য কল্যাণের কারণ হয়।

যেসব বন্ধু মানুষকে গুনাহ, অহংকার, অশ্লীলতা ও আল্লাহর অবাধ্যতার দিকে ধাবিত করে, তাদের ব্যাপারে ইসলাম কঠোরভাবে সতর্ক করেছে। খারাপ বন্ধুদের সম্পর্কে নবী ﷺ বলেন:“খারাপ বন্ধুর দৃষ্টান্ত হলো লোহার কামারের মতো—সে না হয় তোমার কাপড়ে আগুন লাগিয়ে দেবে, না হয় তার খারাপ গন্ধ তুমি নেবে।”

ইসলাম যে বৈশিষ্ট্যের বন্ধু নির্বাচন করতে বলে:

ঈমানদার ও পরহেজগার – নামাজি ও সৎচরিত্রবান। সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত – যার কথায় প্রতারণা নেই।

আল্লাহভীরু ও দীনদার – যাকে দেখলে আল্লাহর কথা মনে পড়ে। সমালোচনা নয়, সংশোধনে আগ্রহী – বন্ধু পেছনে বদনাম না করে, সামনে ভালো কাজে উৎসাহ দেয়। ভালো কাজে সহযোগী, মন্দে প্রতিবাদী – সৎ কাজে সহযোগিতা করে, গুনাহে বাধা দেয়।

কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা নিষেধ?

ইসলাম এমন কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থেকে বিরত থাকতে বলে যাদের আচরণ আল্লাহর বিধান বিরোধী। যেমন—

পাপাচারী ও অশ্লীল ব্যক্তিত্ব।অহংকারী ও দুনিয়াপরায়ণ। দীন থেকে দূরে থাকা।মুনাফিক ও সন্দেহজনক চরিত্র।

বন্ধু নির্বাচনের বিষয়টি শুধুই সামাজিক নয়, বরং ঈমান, নৈতিকতা ও আখিরাতের নিরাপত্তার একটি গভীর প্রসঙ্গ। তাই ইসলাম একজন মুমিনকে উৎসাহিত করে—সে যেন নিজের আখলাক, বিশ্বাস ও দ্বীনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন বন্ধু নির্বাচন করে। বন্ধু হতে পারে জান্নাতের সাথি, আবার হতে পারে জাহান্নামের সঙ্গী। তাই ইসলাম বলে, "ভেবে চিন্তে বন্ধু নির্বাচন করো।"

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ