নেত্রকোনার দুর্গাপুরে চাঁদা না পেয়ে মসজিদের ইমামকে মারধর ও তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করেছে একদল যুবক। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইমাম আব্দুল্লাহ আল মামুন (২৮) বাদী হয়ে তিন যুবকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার সুতিয়াপাড়া গ্রামের মো. জহিরুল (২৭), মো. পলাশ (২৬) ও মো. রুবেল (৩৫)।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়ে গতকালই থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযুক্তরা মামলার পর গা ঢাকা দিয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মামুন পার্শ্ববর্তী পূর্বধলা উপজেলার খারছাইল গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি দুর্গাপুর উপজেলার সুতিয়াপাড়া নুরানিনুরানি
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ মাস ধরে আব্দুল্লাহ আল মামুন দুর্গাপুর উপজেলার সুতিয়াপাড়া নুরানি ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও একই এলাকার মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি মাদরাসা কমিটির সভাপতির অনুমতি নিয়ে তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে মাদরাসা সংলগ্ন নুরানি ঘরে বসবাস শুরু করেন। গত ২ অক্টোবর টিনশেডে রাত ২টার দিকে মোটরসাইকেলে চড়ে কয়েকজন ব্যক্তি মাদরাসায় এসে তাকে নাম ধরে ডাকেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। ইমাম টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে আহত করা হয়। এসময় তার স্ত্রীকে টানা হেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করে তারা।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয় এবং মোবাইলের মাধ্যমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভিডিও ধারণ করে। এমনকি তারা মাদরাসার ঘুমন্ত দুই ছাত্রকে ডেকে তুলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। হামলাকারীরা প্রায় চার ঘণ্টা মাদরাসায় অবস্থান করে চলে যায় এবং ঘটনাটি প্রকাশ করলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
পরদিন সকালে স্থানীয়দের সহায়তায় ইমাম ঘটনাটি মাদরাসা কমিটি ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের অবহিত করেন। স্থানীয়ভাবে সমাধানের অপেক্ষায় থেকে পরে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মাদরাসার শিক্ষক ও ধর্মীয় দায়িত্বে থাকা একজন ইমামের ওপর এ ধরনের হামলা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এলএইস/