বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫ ।। ৫ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ২৩ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
ফজরের নামাজে উপস্থিতি বাড়াতে চায়ের চমৎকার উদ্যোগ—‘আলফজর টি’   ইসরায়েলকে 'মধ্যপ্রাচ্যের ক্যান্সার' বলল উত্তর কোরিয়া সচিবালয়ে চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টানা পঞ্চম দিনের আন্দোলন কক্সবাজারে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে গ্রেপ্তার ৫৭ আওয়ামী নেতাকর্মী ইরান যেভাবে তছনছ করল ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা হোয়াটসঅ্যাপে বিজ্ঞাপনসহ নতুন ফিচার: বদলে যাচ্ছে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপের চেহারা শব্দের চেয়েও পাঁচ গুণ দ্রুত: হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের যুগে বিশ্ব নিরাপত্তা বিশ্বে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতি আর চলতে দেওয়া যায় না হজ পালন শেষে দেশে ফিরেছেন ৩২ হাজার ৩৭০ হাজি গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত

মদিনা নামটি এলো যেভাবে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকে মদিনা শুধু একটি নগরের নাম নয়; এটি বিশ্বাস, ভালোবাসা ও শান্তির প্রতীক। এই শহর বিশ্ব মুসলিমের কাছে পরিচিত ‘নবীর শহর’ হিসেবে। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমনের পূর্বে এ শহরের নাম ছিল ‘ইয়াসরিব’। সময়ের ধারায় এটি হয়ে ওঠে ‘মদিনাতুন্নবী’— অর্থাৎ ‘নবীর নগরী’। সংক্ষেপে যেটিকে আমরা ‘মদিনা’ নামে চিনি।

‘মদিনা’ শব্দটি আরবি ‘মাদীনাহ’ (المدينة) থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘শহর’। মহানবী (সা.) যখন ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা থেকে হিজরত করে এই নগরীতে আসেন, তখনই ইয়াসরিব নামটির পরিবর্তে ‘মদিনা’ নামটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ নামকরণের মাধ্যমে শহরটি পায় এক নতুন পরিচয় এবং মহিমা।

তবে মদিনার ইতিহাস এর চেয়েও অনেক গভীর ও বিস্তৃত। মদিনার অন্যতম প্রাচীন নাম ‘ইয়াসরিব’। এটি এসেছে নবী নুহ (আ.)-এর এক পুত্র ইয়াসরিবের নাম থেকে। ইতিহাসবিদদের মতে, ইয়াসরিব তাঁর বংশধরদের নিয়ে মদিনা অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন এবং তার নামেই জায়গাটির নামকরণ হয়। যদিও ‘ইয়াসরিব’ শব্দের একটি অর্থ ‘ধমক দেওয়া’ বা ‘অভিযুক্ত করা’, তবুও এটি দীর্ঘকাল ধরে শহরটির পরিচিতি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

মদিনাকে ‘তাইবাহ’ নামেও ডাকা হয়, যার অর্থ ‘পবিত্রতা’ বা ‘স্নিগ্ধতা’। এই নাম এসেছে ‘তিব’ শব্দ থেকে। পবিত্র কুরআন ও হাদিসেও মদিনাকে ‘তাইবাহ’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। শহরটির আরেকটি নাম হলো ‘দারুল হিজরাহ’, অর্থাৎ ‘হিজরতের স্থান’, কারণ এখানেই হিজরতের মাধ্যমে নবীজি (সা.) ইসলামী ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন।

মদিনার গোড়ার দিকে যে দুটি কাবিলা বসতি গড়েছিল তারা হলো ১. বানু মাতরাওলিল, ২. বানু হাওফ। এই দুটি গোত্রই নবী নুহ (আ.)-এর পুত্র শামের বংশধর ছিল বলে বিশ্বাস করা হয়।

পরে ইয়েমেনি গোত্র বানু আওস এবং বানু খাযরাজ মদিনায় এসে বসবাস শুরু করে। হিজরতের সময় এই দুই গোত্রই রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় এবং সম্পূর্ণ আস্থা ও ভালোবাসার সঙ্গে তাকে তাদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করে। মদিনার অধিবাসীরা নবীজি (সা.)-কে শান্তির দূত ও অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ইয়াসরিব নামটি বদলে যায় ‘মাদিনাতুন্নবী’-তে।

মদিনায় হিজরতের পর রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেন তা হলো ‘মদিনা সনদ’ রচনা। এটি ইতিহাসের প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে খ্যাত। এই সনদের মাধ্যমে মদিনায় বসবাসকারী মুসলমান, ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নিয়মনীতি নির্ধারণ করা হয়। এই সনদে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়।

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর যুগ এবং তার পরবর্তী চার খলিফা— আবু বকর, উমর, উসমান ও আলী (রাযি.)—এর শাসনামলে মদিনা ছিল ইসলামী খেলাফতের রাজধানী। তবে পরবর্তীতে উমাইয়া খেলাফতের সময় রাজধানী সরিয়ে নেওয়া হয় সিরিয়ার দামেস্কে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ