মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ভাগ্যক্রমে একজন আমির পেয়েছে এবং জাতি পেয়েছে একজন নেতা, যিনি উদারতার শীর্ষে এবং ক্ষমা চাওয়ার এক বিরল ব্যক্তিত্ব। যিনি ৪৭ থেকে এ পর্যন্ত সকল ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
মানুষের দ্বারা ভুল হতেই পারে, তবে ভুলকে স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া একটা সাহসিকতার ব্যাপার। তিনি দেশেও বারবার ক্ষমার বিষয়টি সামনে এনেছেন, এবার নিউইয়র্ক গিয়েও ক্ষমা চেয়েছেন। এই মনমানসিকতার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।
অন্যায় বা ভুল ব্যক্তিবিশেষের পক্ষ থেকেও হতে পারে আবার সমষ্টিগত ভাবে জাতীয় বিষয়েও হতে পারে। ব্যক্তিবিশেষ সংক্রান্ত ভুলটি ব্যক্তি পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তাঁরই। তবে জাতীয় বিষয়ে ভুল হলে তার ক্ষমার ব্যাপারটি একটু কঠিন। যদি রাষ্ট্র বা জাতীয় কোন বিষয়ে অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রাখে বলে আমি মনে করি। কারন কোন বিষয়কে ঝুলিয়ে রাখা বা রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা একটা ঘৃণ্য মানসিকতা এবং অপরাধ। তবে যেহেতু এমন লোকদের দ্বারা বা দল কর্তৃক রাষ্ট্রীয় ও জাতি সংক্রান্ত অপরাধ হয়েছে, এখানে তাদের অযোগ্যতা ও অদূরদর্শিতার প্রমাণ বহন করে। সেহেতু তাদেরকে রাষ্ট্র বা জাতীয় দায়িত্ব দেওয়া যাবেনা। নাহলে যেকোন সময় দেশ-জাতি দুইটাই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নাহয়, সেটা হচ্ছে, কোন অপরাধের ক্ষমা চাইতে হলে অপরাধের উল্লেখ থাকতে হয়। অপরাধের উল্লেখ না করে উহ্য রেখে পাইকারিভাবে ক্ষমা চাওয়া মুলত আসল জিনিসকে স্বীকৃতি না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়া বা ধামাচাপা দেওয়া। এটাও একটা অপরাধ। অপরাধ দিয়ে অপরাধকে ঢাকা যায়না। এটা জাতিকে বোকা মনে করার মানসিকতা। আরেকটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, জামাত আমির বলেছেন, ৯৯ টাই সঠিক, ১ টা ভুল হতেই পারে। হতেই পারে বাক্যটির দ্বারা ভুলের স্বীকৃতি হয়না বরং এখানেও ভুলকে এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা। জনগণকে কথার এতো মার প্যাচে ফেলে দেয়ার দরকার ছিল না। আল্লাহই ভালো জানেন।
লেখক: সিনিয়র সহসভাপতি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
আরএইচ/