শহীদ আলিফ হত্যার বিচার দ্রুত কার্যকর, গাজীপুরে মসজিদের খতিবকে গুম করে হত্যা চেষ্টা এবং সারাদেশে মুসলিম মেয়েদের টার্গেট করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন "ইসকন" নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর ২০২৫) দুপুর দুইটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জিরো পয়েন্টে চবিয়ান দ্বীনি পরিবারের ব্যানারে ইসকন নিষিদ্ধের দাবীতে মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আদনান রাশাদ বলেন, "সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গাজীপুরের আশা মনি ধর্ষণ ও ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় ইমামকে গুম ও হত্যার চেষ্টা ঘটনায় যে নাম উঠে আসে তা হলো ইসকন। ভারতের মদের পুষ্ট উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন এই ইসকনের ১৯৬৬ সালের নিউইয়র্কে প্রতিষ্ঠার পরপরই নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হয় ইসকনের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশে এসেই তারা ভিন্ন মতাদর্শের হিন্দুদের মন্দির জোরপূর্বক দখল করে। ২০১৪ সালে তারাবির নামাজে বাধা, ২০১৬ সালে ইসকন মন্দির থেকে মুসলিমদের উপর গুলি বর্ষণ করে। ভাগাওয়া লাভ ট্র্যাপের মাধ্যমে মুসলিম মেয়েদের চরিত্র হননসহ নানা দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত হয় এই ইসকন। এমনকী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডেও ইসকনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। সরকারকে বলতে চাই অনতিবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদের দাঁত ভেঙে দিতে হবে”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিত তালুকদার বলেন, "আলোচিত গাজীপুরের কালিয়াকুরে মাদ্রাসার ছাত্রী ১৩ বছরের শিশু আশা মনিকে ধর্ষনের মাধ্যমে তারা সাথে হওয়া জঘন্যতম জুলুম, মসজিদের খতিবকে গুম করে হত্যাচেষ্টা। এসবের সাথে ইসকনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এসেছে। চট্টগ্রামে এ্যাডভোকেট আলিফকে হত্যা, টঙ্গীতে ইমামকে গুম করে হত্যাচেষ্টা এবং সারাদেশে অসংখ্য মুসলিম মেয়েদের ধর্ষণের ঘটনার আমরা দ্রুত বিচার দাবী করছি।"
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও চবিয়ান দ্বীনি পরিবারের জিম্মাদার আবরার জাওয়াদ হাসান সাত দফা দাবি পেশ করে বলেন,
"১️. শিশু আশামনি ধর্ষণের বিবৃতিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার কর্তৃক প্রকাশিত মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ফেসবুক স্ট্যাটাস উইথড্র করতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে এবং ইস্কন ও পতিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে জড়িত এবং দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া ভারতের মদদপুষ্ট পুলিশদেরকে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে
২️. শিশু আশা মনির ধর্ষণকারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
৩️. শহীদ আলিফ হত্যার সুষ্ঠু বিচার করতে হবে,তার সাথে জড়িত কুলাঙ্গার চিন্ময় এবং তাদের চক্রকে দেশবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪️. জঙ্গী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে, নির্মুল করতে হবে এবং ভবিষ্যতে তারা যেনো কোন কার্যক্রম করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫️. বুয়েটের ধর্ষক শ্রীশ্রান্ত রায় এবং এ যাবতকালের অন্যান্য ইসকনী হিন্দুত্ববাদী ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করতে হবে।
৬. টঙ্গীর ইমাম কে অপহরণ, তার বাড়ির সম্মানিতা মহিলাদের ধর্ষণের হুমকিদাতা এবং তাকে ভারতে পাচার করতে যারা উদ্যত হয়েছে,কাজ করেছে এদের সবাইকে তদন্ত কমিশন গঠন পূর্বক শনাক্ত করা এবং শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে যেন পরবর্তীতে তারা দেশবিরোধী এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করতে না পারে।
৭. ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ন্যারেটিভ দাড় করানো আকাশ দাসকে চাকসু থেকে পদত্যাগ করতে হবে এবং এখনো তার বিষয়ে চাকসু ও নির্বাচন কমিশন কেন সিদ্ধান্তে আসেনি তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।"
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা "ইসকন তুই জঙ্গি, ফ্যাসিবাদের সঙ্গী", "কত আলিফের গেলে প্রাণ? ইসকনের হবে অবসান", "আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই", "নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর", "আলিফ হত্যার বিচার চাই, জঙ্গি ইসকন নিষিদ্ধ চাই", শাহজালালের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার", "ইসকন আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার" প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এলএইস/