রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ৮ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
মাওলানা যাইনুল আবিদীনের 'আমাদের নবীজি' গ্রন্থের পাঠ উন্মোচন সোমবার ছয় মাসেই উমরা পালনকারীর সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়েছে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াত নেতাদের সাক্ষাৎ গাজার জন্য আরও ১০০ টন ত্রাণ পাঠাল পাকিস্তান সাংবাদিকের ওপর হামলায় দুই রাজনৈতিক দলের নিন্দা কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে: পীর সাহেব মধুপুর  নৌকাসহ বাংলাদেশি ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল ‘আরাকান আর্মি’ ‘জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি না পেলে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হবে’ গাজার সংকট নিয়ে মেলানিয়া ট্রাম্পকে এরদোয়ানের স্ত্রীর চিঠি রংপুর বিভাগে ৩৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা

‘জুলাই সনদ আইনি ভিত্তি না পেলে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হবে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলাই সনদ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করার তাগিদ দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সনদের আইনি ভিত্তি না দেওয়া হলে, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবনা কমিশন না জানালে, সেটি দেশের মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হবে। ব্যর্থ কোনো সনদে এনসিপির স্বাক্ষর করা অর্থহীন।

শনিবার বাংলামটরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে অনেক রাজনৈতিক দল ধোঁয়াশা তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। জুলাই সনদের মাধ্যমে নির্বাচন না হলে, তাতে অংশ নেওয়ার কোনো মানে থাকে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তাতে এনসিপি অংশ নেবে কিনা জানতে চাইলে আখতার হোসেন, বাংলাদেশে নির্বাচন থেকে অবশ্যম্ভাবী ঘটনা। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই নির্বাচন যাতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে স্বচ্ছ, সুন্দর এবং সুষ্ঠু হয় সে দাবি সরকারের কাছে করছি। নির্বাচন ফেব্রুয়ারি আগে যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু নির্বাচনের ধরণটা কি হবে, তা জাতির সামনে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধান বহাল রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার সমূহ সম্ভাবনা রয়ে যাবে। তাই সামনের নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে। এ জন্য নতুন করে এলএফও (আইনগত কাঠামো আদেশ)করতে হবে। যদি নতুন সংবিধানের ব্যাপারে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন হলে এনসিপি যেকোনো সময়ে সে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত।

গণপরিষদ নির্বাচনের দাবির কথা উল্লেখ করে আখতার হোসেন বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান করছি— সরকার নতুন সংবিধানের বিষয়ে জুলাই সনদের বিষয়গুলোকে অপরিপূর্ণ রাখে, সেটাকে বাস্তবায়ন না করে নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে পারবে না। সে নির্বাচনে এনসিপি অংশ নেবে কিনা সংশয়ের জায়গা রয়েছে। আমরা মনেকরি আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ নতুন শাসনতান্ত্রিক কাঠামো পাবে। সেটা না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আদতে কোন মানে থাকে না।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবির মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলোকে পরের সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়নের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, যেটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতমুখী অবস্থান। আমরা এ কারণে নতুন সংবিধানের দাবি করছি। সরকার যেকোন সময়ে নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে, গণপরিষদ নির্বাচন হলে সেটা ডিসেম্বরেও আয়োজন করতে পারে। সে নির্বাচনের মাধ্যমে জাতিকে নতুন সংবিধান উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। সত্যিকার অর্থেই গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই যে নতুন সংবিধানের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলোকে সংহত করে টেকসইভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

এক প্রশ্নের জবাবে আখতার হোসেন বলেন, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপির আপত্তি। সংস্কারের বিষয়গুলো নতুন সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়েও আপত্তি দিয়েছেন। সংস্কার প্রস্তাবগুলো বিএনপি আসলে কতটা মন থেকে গ্রহণ করে সেই প্রশ্ন তৈরি করেছে।

জুলাই গণঅভ্যুথানের মাধ্যমে সংস্কারের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে আখতার বলেন, সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা না গেলে, আইনি মারপ্যাঁচ রেখে দিয়ে নোট অব ডিসেন্টের কথা বলে পরবর্তীতে কেউ ক্ষমতায় এসে তা সংস্কার বাস্তবায়ন না হওয়ার পথ খোলা রাখা হলে, জুলাই সনদের এ অপরিপূর্ণতার কাছে একটা প্রতারণার জায়গা তৈরি করবে।

বিএনপি কি সে প্রতারণার পথে অগ্রসর হচ্ছে কিনা, সেই প্রশ্নটা রাখতে চাই। নতুন সংবিধানের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবনা টেকসই হবে এবং কোর্ট তাতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না বলে মনে করেন আখতার। তিনি বলেন, সেই শুভবুদ্ধি যাতে অন্য দলগুলোর মাঝে উদিত হয় সেই আহ্বান করি।

জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্টের বিষয়ে আখতার হোসেন বলেন, নোট অব ডিসেন্টের অর্থ কমিশন এখনো আমাদের পরিষ্কার করেনি। যার অর্থ এ কোনোভাবে এটা নয়, কমিশন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তার বিপরীত কিছু বাংলাদেশে প্রবর্তন করা হবে। কমিশনের সব সিদ্ধান্তে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে তা নয়, কিন্তু বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের মতের ভিত্তিতে তারা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা যেন দেশে হুবহু বাস্তবায়ন হয়। সেই বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে স্থির সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।

সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পদ্ধতি টেকসই নয় বলে মনে করেন আখতার হোসেন। তিনি বলেন, কোর্টের মতামত চাওয়া হলে, তাতে মতামত দিতেও পারে, নাও পারে। এতে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ কারণে আমাদের কাছে মনে হয়েছে জুলাই সনদ নতুন সংবিধানের মাধ্যমে সংহত করা সম্ভব। যার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি করে এনসিপি। যাতে সংবিধানিক সংকট থেকে উত্তরণ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন, জয়নাল আবেদীন শিশির, জহিরুল ইসলাম মুসা, এস এম সাইফ মোস্তাফিজ, কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসেন।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ