তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান গাজার ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) প্রেরিত ওই চিঠিতে তিনি আহ্বান জানান, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি মেলানিয়ার যে সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে, গাজার ক্ষেত্রেও যেন তা প্রতিফলিত হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গে মেলানিয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পাঠানো সাম্প্রতিক চিঠির কথা উল্লেখ করে এমিনে বলেন, “আপনার ভাষায় প্রতিটি শিশুরই ভালোবাসা ও নিরাপদ পরিবেশে বেড়ে ওঠার অনস্বীকার্য অধিকার রয়েছে। এই অধিকার কোনো অঞ্চল, জাতি বা ধর্ম দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়ানো মানবজাতির প্রতি মৌলিক দায়িত্ব।”
চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধাহত শিশুদের প্রতি আপনার সহানুভূতি প্রশংসনীয়। আমি বিশ্বাস করি, গাজার শিশুদের ক্ষেত্রেও একইভাবে আপনার মানবিক সংবেদনশীলতা প্রকাশ পাবে। সেখানে দুই বছরে ১৮ হাজার শিশুসহ ৬২ হাজার নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
গাজার শিশুদের করুণ অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে এমিনে বলেন, “হাজার হাজার শিশু আজ ‘অজানা শিশু’ হিসেবে কবরস্থ হচ্ছে। তাদের নামও শনাক্ত করা যাচ্ছে না। যুদ্ধের বিভীষিকা তাদের হাসি কেড়ে নিয়েছে, এমনকি কেউ কেউ মৃত্যুকেই মুক্তি ভাবছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, গাজায় এতিম শিশুদের চুল ভয়ের কারণে অকালেই ধূসর হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সম্মিলিত জাগরণ ও ফিলিস্তিনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রেক্ষাপটে এখনই সময়, গাজার পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠ তোলার।
চিঠিতে তিনি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার অন্যায় চিত্রের সমালোচনা করে লেখেন, “যেখানে কিছু জীবনকে অন্যদের চেয়ে বেশি মূল্যবান মনে করা হয়, সেখানে আমাদের একত্রে এই বিকৃত ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। মানবিক মূল্যবোধ ও আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখা এখন জরুরি।”
শেষে এমিনে বলেন, একজন মা ও নারী হিসেবে আমি আপনার অনুভূতির সঙ্গে একমত। আমি আশা করি, আপনি গাজার শিশুদের প্রতিও সমানভাবে আশা ও সহানুভূতি প্রকাশ করবেন। ইতোমধ্যেই ১৮ হাজার ৮৮৫ শিশু প্রাণ হারিয়েছে, কিন্তু লক্ষাধিক শিশু এখনো বেঁচে আছে। তাদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
এমএইচ/