||মুফতী আব্দুল কুদ্দুস||
তিনি একাধারে একজন আলেম, বক্তা, রাজনীতিবিদ, লেখক, খতিব, মুফাসসির ও মুহাদ্দিস। এছাড়াও তার রয়েছে নানা পরিচয়। তিনি মুফতি আখতারুজ্জামান হাফিজ্জী। কিশোরগঞ্জের হাওর বিধৌত জেলা বাজিতপুরে তার জন্ম। বহুমুখী যোগ্যতার অধিকার আলোকিত এই আলেম ও নেতা দীনের নানামুখী সেবা করে যাচ্ছেন।
মুফতী আখতারুজ্জামান হাফিজ্জী ১৯৭৬ সালের ১ মে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার আয়নারগোপ পাড় কচুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মৃত মোহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন। মায়ের নাম মাহবুবা বেগম। চার বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
আয়নারগোপ পাড় কচুয়া জামে মসজিদে সবাহি মক্তবের পাশাপাশি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার পড়াশোনার হাতেখড়ি। পরবর্তী সময়ে আয়নারগোপ পাড় কচুয়া সাউতুল হেরা মাদরাসায় মিজান জামাত শেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কচুয়া মাদরাসায় কাফিয়া জামাত পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর পড়াশোনা করেন জামিয়া ইউনূসিয়ায়। সেখান থেকে রাজধানীর গুলশানের জামিয়া আশরাফিয়া মাদরাসায় ভর্তি হন। পরবর্তী সময়ে গেন্ডারিয়ার জামালুল কুরআন মাদরাসা থেকে ২০০১ সালে বেফাক কেন্দ্রীয় পরীক্ষার দাওরায়ে হাদিসে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার থেকে দুই বছরে ইফতা সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবনে কিছুদিন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান শামসুল উলুম মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। পরে কিছুদিন আয়নারগোপ পাড় কচুয়া সাউতুল হেরা মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। রাজধানীর কুড়িলের জোয়ার সাহারা এমদাদুল উলুম মাদরাসায় তিন শতাধিক আলেমের সঙ্গে ইন্টারভিউ দিয়ে এক নাম্বার হয়ে মুহাদ্দিস হিসেবে নিয়োগ পান। পাশাপাশি গুলশান-২ নম্বরে সুলমাইদ বাইতুর রহমত জামে মসজিদে খেতাবতের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বেপারী মার্কেট কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব হিসেবে নিয়োগ পান। অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে প্রায় ২০ বছর যাবত সেখানে খেদমত করছেন। পাশাপাশি ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন জামিয়া আব্দুল বাসিত নুরে মদিনা মাদরাসা।
এই আলেমে দীনের সাড়া জাগানো গ্রন্থ عمل قليل اجر كثير من ضوءالقران والسنة তথা কুরআন সুন্নাহর আলোকে আমল কম সাওয়াব বেশি নামক কিতাবটি ইতোমধ্যে বেশ সমাদৃত হয়েছে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন মাসিক ও জাতীয় পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তখন থেকেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়ান। ২০০১ সালে শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রহ.কে গ্রেফতারের পর তাঁর মুক্তির দাবিতে গভীর রাতে পোস্টার লাগানোর সময় কুকুরের কামড় খেয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কওমি সনদের স্বীকৃতির দাবিতে শায়খের সঙ্গে মুক্তাঙ্গনে অবস্থান করতে গিয়ে তাঁর খতিবের চাকরি চলে গিয়েছিল। মাওলানা মামুনুল হক কারাবন্দি থাকাকালে তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েও তিনি নিপীড়নের শিকার হন।
মুফতি আখতারুজ্জামান হাফিজ্জী বর্তমানে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানার সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তরের নির্বাহী সদস্য হিসেবে কাজ করছেন। সংগঠনের আমির মাওলানা মামুনুল হকের একান্ত অনুগত হয়ে তিনি কাজ করছেন। নিজ এলাকার সঙ্গেও তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। সেখানকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত। এজন্য আগামী নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের রিকশা প্রতীকে তাকে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে জোর দাবি রয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন তার মতো যোগ্য প্রার্থী জনপ্রতিনিধি হলে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
এনএইচ/