বর্তমান সরকারের সময় যদি প্রশাসনে কোনভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত কেউ থাকে তাদের রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী । কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্টই হলো নির্দলীয়তা। নির্দলীয় হলে সেখানে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা বা দলীয় পরিচয়ের লোকদের থাকার কোনো কারণ নেই।
গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজনীতির সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরের নানা ধরনের অপকর্মে যারা জড়িত এবং যারা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা গোপনে থাকেনি, অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপ নেবে তখন তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত; তা হলে বিগত ১৬ বছর যারা ভোটে বিশ্বাস হারিয়েছেন তাদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে রিজভী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রসঙ্গে বলেন, এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায়। আইনি প্রক্রিয়ায় যা হওয়ার তা হবে, যারা অপরাধী তাদের বিচার হওয়া উচিত, তবে সবকিছুতে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তারা প্রমাণ করবেন যে তারা অভিযুক্ত নয়; এবং যদি আদালত প্রমাণ করে তারা অভিযুক্ত, তাহলে আদালতের নির্ধারিত শাস্তি ভোগ করতে হবে—আইনের চোখে সবাই সমান।
রিজভী উল্লেখ করেন, জুলাই সনদ মোটামুটি সবাই মেনে নিয়েছে এবং সেখানে থাকা অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দেশের সব ক্ষেত্রে চরমভাবে দলীয়করণ হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের অনেককে দেশে থাকতে না পেয়ে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে তাদের জমিদারি সারাজীবন থাকবে, এমন ভেবে ছিলেন; কিন্তু ৫ আগস্টের পর অনেকের মানসিকতা পরিবর্তিত হয়েছে, তবু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক হয়নি।
রিজভী বলেন আরও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২৫ কোটি বৃক্ষরোপণ করা হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সব ধরনের কাজ করা হবে। বর্তমান সরকারে যদি দলীয় কেউ থাকে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে, তা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এমন আশঙ্কাও রিজভীর বক্তব্যে ছিল।
এনএইচ/