সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫ ।। ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১৭ সফর ১৪৪৭


বরকত : কল্যাণময় জীবনের চাবিকাঠি


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||

“বরকত” শব্দটি আরবি "باركة" (বারাকা) থেকে এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে: বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধি, স্থায়িত্ব এবং কল্যাণ। ইসলামী পরিভাষায় বরকত বলতে বোঝায়—আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন এক অদৃশ্য কল্যাণ ও শুভ্রতা, যা অল্প জিনিসকেও যথেষ্ট করে দেয়, অপ্রতুলকেও পরিপূর্ণ করে দেয় এবং দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ বয়ে আনে। কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী বরকতের মূল উৎস একমাত্র আল্লাহ। কুরআনে বলা হয়েছে:  "বরকতময় আল্লাহ, যিনি সব জগতের প্রতিপালক।" (সূরা আর-রাহমান: ৭৮)

বরকত শুধু ধন-সম্পদেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দেখা যেতে পারে—জীবনের সময় ও আয়ুতে , জ্ঞান ও আমলে, রিজিক ও সম্পদে , সন্তান ও পরিবারে এবং সম্পর্ক ও সমাজে । একজন মানুষ অল্প আয় করেও সুখে শান্তিতে থাকতে পারে, আবার অনেকে বিপুল সম্পদেও অসন্তুষ্ট—এটাই বরকতের বাস্তব প্রভাব।
রিজিকে বরকত বিষয়ে  কুরআনে বলা হয়েছে, "যদি জনপদের লোকেরা ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।" (সূরা আল-আরাফ: ৯৬) সময় ও কাজে বরকত বিষয়ে  হাদীসে এসেছে, “উম্মতের সকালে বরকত রেখেছেন আল্লাহ।” (তিরমিযী)

বরকত অর্জনের কিছু মাধ্যম:
বরকত অর্জনের মাধ্যমে হচ্ছে, তাকওয়া অবলম্বন করা , ইস্তিগফার ও তাওবা করা , সদকাহ ও দান খয়রাত , আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা (সিলাতুর রাহম), সুদের বর্জন ও হালাল রুজিতে সন্তুষ্ট থাকা , নিয়মিত নামাজ ও কুরআন তিলাওয়াত  এবং সকাল সকাল কাজ শুরু করা।  
বরকত একটি অদৃশ্য কিন্তু বাস্তব উপলব্ধির বিষয়। এটি সংখ্যা নয়, গুণে প্রকাশ পায়। একজন মুমিনের জীবনে বরকত তখনই আসে, যখন সে নিজের জীবন আল্লাহর নির্দেশ ও রাসূল (সা.)-এর সুন্নাহ অনুযায়ী পরিচালিত করে। দোয়া, তাকওয়া, হালাল রিজিক এবং মানুষের হক আদায়—এসবই বরকতের চাবিকাঠি। বরকতহীন জীবন, সম্পদ ও সময় অনেক হলেও তার ফল হয় শূন্য। পক্ষান্তরে বরকতময় জীবন অল্প হলেও শান্তিময়, কল্যাণময় ও সফলতাময়।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ