বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫ ।। ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৮ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
আধুনিক ইতিহাসে অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যাকারী ইসরায়েল: জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলাই সনদ ছাড়া নির্বাচনে যাবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম গুমের সঙ্গে জড়িত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাবাহিনী জাতিসংঘের সমকামী দূত ও কার্যালয় স্থাপন বাতিলের দাবি খেলাফতের ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত তাবেলা সিজার হত্যা : তিনজনের যাবজ্জীবন, চারজন খালাস হযরত মুহাম্মদ (সা.) -এর অবমাননা একটি উসকানিমূলক ও ঘৃণিত কাজ জামেয়া ইসলামিয়া মুনশীবাজারে প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণে আলোচনা সভা ১২ জুলাই মুহতামিম সম্মেলন সফল করতে মানিকছড়িতে মতবিনিময় সভা শুটকি মাছের পুষ্টিগুণ

জুমাতুল বিদা পালনের প্রবণতা: কী বলছেন আলেমরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

আগামী ২৭ রমজান (২৯ এপ্রিল)  এই রমজানের শেষ শুক্রবার। বাংলাদেশে রমজান মাসের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা হিসেবে পালন ও অভিহিত করা হয়। জুমাতুল বিদা দ্বারা রমজানের শেষ জুমা বোঝানো হয়।

কোনো কোনো মানুষের ধারণা, এর বিশেষ ফজিলত রয়েছে। তারা এ জুমাকে খুব গুরুত্ব দেয় এবং একে শরিয়ত নির্দেশিত ফজিলতপূর্ণ দিবস-রজনীর অন্তর্ভুক্ত মনে করে। ফলে তারা এ জুমা আদায়ের জন্য পারতপক্ষে এলাকার সবচেয়ে বড় মসজিদে গমন করে। সেই সঙ্গে এ জুমায় মুসল্লির সমাগমও বেশি হয়।

কিন্তু ইসলামি শরিয়তে জুমাতুল বিদা বলে আলাদা ফজিলতের কিছু নেই। এটি একটি নব আবিষ্কৃত পরিভাষা। এর কোনো বিশেষ ফজিলত কোরআন-হাদিসে পাওয়া যায় না। নবী করিম (সা.), সাহাবায়ে কেরাম কেউ এর আমল করেননি। বরং এটি রমজানের অন্যান্য জুমার মতোই ফজিলত রাখে; এর বাড়তি কোনো ফজিলত প্রমাণিত নয়।

জামিয়া ইউসুফ বানুরীর মুহতামিম ও মাহমুদ নগর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আতাউল করিম মাকসুদ বলেছেন, ইসলামে জুমাতুল বিদা নামে কিছু নেই। অনেকে রমজানের শেষ জুমায় বিশেষ নফল নামাজের কথা বলেন, হাদিসের আলোকে এসবের কোন ভিত্তি নেই।

তিনি বলেছেন, ‘এটা নতুন আবিস্কৃত একটা শব্দ। এর আলাদা কোন মাহাত্ম্য ও বৈশিষ্ট্য নেই। পরিপূর্ণরূপে একে পরিহার করা প্রয়োজন’।

‘নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস উদ্ধৃত করে তিনি আরো বলেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমার উম্মত যদি জানতো রমজান মাস কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাহলে তারা আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করতো যেন বছরের প্রত্যেকটা দিন রমজান মাস হয়ে যায়’।

‘রমজানের প্রত্যেকটি দিন গুরুত্বপূর্ণ, সেদিক বিচেনায় রমজানের শুক্রবারও তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু এটাকে কেন্দ্র করে জুমাতুল বিদা পালন, বিশেষ প্রস্তুতি ও সাজ-সাজ রব, এসবের কোন অস্তিত্ব নেই ইসলামে’।

‘শরীয়তে নেই এমন বিষয় উদ্ভাবন ও পালন থেকে শতভাগ বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে মুফতি আতাউল করিম মাকসুদ বলেছেন, জুমাতুল বিদা পালনের বিষয়টি যেন বেদয়াত পর্যায়ে চলে না যায়, সেদিকে আমাদের এখনি খেয়াল ও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে’।

দৈনিক নয়া শতাব্দীর ইসলাম বিভাগীয় সম্পাদক, আন নূর জামে মসজিদের খতিব ও মাদরাসা আবু রাফে (রা.)-এর পরিচালক মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব বলেছেন, ‘জুমাতুল বিদা অর্থ হচ্ছে রমজানের শেষ জুমা। তবে আমাদের দেশে জুমাতুল বিদা পরিভাষাটি আলাদাভাবে পালনের পর্যায়ে চলে গেছে যা হওয়া উচিত ছিল না’।

তিনি বলেছেন, ‘রমজানের শেষ জুমাকে রমজানের শেষ জুমা তো অবশ্যই বলা যাবে কিন্তু বর্তমানে ‘জুমাতুল বিদা’ পরিভাষা ব্যবহার করে এর আলাদা মাহাত্ম্য বুঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে এবং আমরা সচেতন না হলে জুমাতুল বিদা; ‘জুমাতুল বিদয়াতে’ রূপ নেবে’।

তিনি আরো বলেছেন, ‘সচেতন আলেম ও মিডিয়াতে যারা কাজ করছেন তাদের উচিত মানুষকে বিষয়টি বুঝিয়ে দেওয়া ও সচেতনতা তৈরি করা’।

‘রমজানের শেষ জুমা পালনের থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, রমজান শেষ হয়ে যাচ্ছে এই মাস থেকে আমরা কতটা অর্জন করতে পারলাম সেই হিসেব করা ও আমল বাড়িয়ে দেওয়া’।

‘রমজানের প্রতিটি দিন ও জুমা গুরুত্বপূর্ণ সেদিক বিবেচনায় আমলের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে কিন্তু আলাদা পরিভাষা ও মাহাত্ম্য বুঝিয়ে জুমাতুল বিদা পালনের যে পবণতা এ থেকে সরে আসতে হবে আমাদের’- মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব।

‘শরীয়তে নেই এমন বিষয় থেকে বেঁচে থাকা অত্যন্ত জরুরি। এ নিয়ে ইসলামি অঙ্গনের মিডিয়াকর্মীদের এগিয়ে আসা উচিত। আমি নিজেও গত চার/ পাঁচ বছর ধরে এ নিয়ে লিখে চলেছি বলে মন্তব্য করেছেন মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব।

আরো পড়ুন: জাতীয় মসজিদের খতিবের কাছে আলেমদের প্রত্যাশা

এএ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ