আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঠেকাতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচনের পথ রোধে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে কাজ শুরু করেছে এবং তারা সুযোগ সৃষ্টি করেও গণতন্ত্রের উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদের স্মরণে স্মরণসভা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ফখরুল বলেন, “পৃথিবীর ইতিহাসে বিএনপি-এর মতো এত ত্যাগ কেউ স্বীকার করেছে কি না জানা নেই। ২০ হাজার নেতাকর্মীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এতকিছুর পরও বিএনপি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এবং একবারের জন্যও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই থামায়নি।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করে বেঁচে থাকে। যারা এখন জুলাইয়ের কৃতিত্ব নিয়ে এককভাবে দাবি করছেন, তারা ভুল বোঝাচ্ছেন। আসলে এই আন্দোলনের কৃতিত্ব জনগণের। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা যেন বিফলে না যায়।”

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। এসব তারেক রহমানের ভয়েই করা হচ্ছে। সংগ্রাম এখনও শেষ হয়ে যায়নি। তারা ফাঁদ পেতেছে, কিন্তু বিএনপি সেই ফাঁদে পা দেবে না। গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত করতেই এমন কাজ করা হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। ঘোষিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এ বিষয়ে আমাদের কোন সন্দেহ নেই।”

৭১ ও ৯০ সালের পর ২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল। তিনি বলেন, “জুলাইয়ের বিজয়ের কৃতিত্ব জনগণের। সবাই একসাথে নেমে এসেছিলেন, তাদের একটাই লক্ষ্য ছিল—গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া।”

নেতাকর্মীদের সতর্ক করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তারা চেষ্টা করছে বিএনপি-কে তাদের পাতা ফাঁদে ফেলতে। লন্ডন বৈঠকে নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়ার পর থেকেই চক্রান্তকারীরা ঝামেলা শুরু করে দিয়েছে। উত্তেজিত হবেন না, বিভ্রান্ত হয়ে তাদের ফাঁদে পা দেবেন না।”

তিনি বলেন, “দেশের যত মহান অর্জন হয়েছে, তা বিএনপি-এর হাত ধরেই হয়েছে। সবাইকে একসাথে নিয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। তৎকালীন সরকার দেশের যেখানেও দেশটিকে নিয়ে গিয়েছিল, সেখান থেকে উত্তরণ প্রয়োজন ছিল। ফ্যাসিস্টরা দেশকে গোলাম বানিয়ে রাখতে চেয়েছিল।”

ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও ষড়যন্ত্র থেমে নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “গণতন্ত্রের উত্তরণ রোধে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। তারেক রহমান জাতীয় নেতা—তাহলে তাকে নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অশ্লীল, অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলা হচ্ছে, শুধু ভয় থেকে।”

এছাড়া, সভায় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এর সঞ্চালনায় সভাপতি রাকিবুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।

এমএইচ/