মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ মো. তাহের হাসপাতালে যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নির্ভর করছে আফগানের ওপনের: পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিমাবন্দরে আগুন ফ্যাসিস্ট হাসিনার নাশকতার অংশ : আমান উল্লাহ বাড়িভাড়া বৃদ্ধি হওয়ায় ‘সন্তুষ্ট’ শিক্ষকরা, আন্দোলন স্থগিত বিএনপির সাথে মার্কিন আইআরআই প্রতিনিধিদলের বৈঠক আদর্শ সমাজ বিনির্মানে আলেম-ওলামা ও সমাজের বিশিষ্টজনদের এগিয়ে আসতে হবে : আব্দুল আউয়াল ‘নির্বাচনে খুব একটা উৎসাহিত না, করলে তিনটি আসনের কোনোটিতে করব’ রুপসার ইলাইপুরে হাতপাখা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন নির্বাচনে এআইয়ের অপব্যবহার রোধে কেন্দ্রীয় সেল গঠনের ঘোষণা সিইসির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মসজিদের অজুখানা নিয়ে সংঘর্ষ : আহত ২০, গ্রেফতার ৪

সারা দেশে উত্তাল গায়েবানা জানাজা: শাটডাউন কর্মসূচিতে উত্তপ্ত রাজপথ


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪ সালের ১৭ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে সারা দেশে গায়েবানা জানাজা আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে এসব কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা ও দমন-পীড়নের অভিযোগ উঠেছে। এদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জানাজা ও বিক্ষোভের মধ্যেই সংঘর্ষ, কফিন মিছিল, সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে আন্দোলনকারীরা ১৮ জুলাই সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে।

ভোর থেকেই আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগ কর্মীদের হটিয়ে দিয়ে ক্যাম্পাস ‘রাজনীতিমুক্ত’ ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত হল খালি করার নির্দেশ দেয় এবং শিক্ষার্থীদের ছুটি ঘোষণা করে। ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানাজার আগে রাজু ভাস্কর্যে সমবেত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এরপর বিকেলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বিভিন্ন স্থানে গায়েবানা জানাজা ও মিছিলেও হামলার অভিযোগ উঠে ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামে ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামসহ সারাদেশে নিহত হন ৬ জন শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারীরা এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় এবং আন্দোলন আরও বেগবান করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, “শান্তিপূর্ণ জানাজা এবং স্মরণ কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। এটা ন্যক্কারজনক এবং অমানবিক।”
আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া রাতে ফেসবুক লাইভে ঘোষণা দেন, “১৮ জুলাই দেশজুড়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলবে। হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত থেকে ছাত্রসমাজ ন্যায়বিচার পাবে।” তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “এই আন্দোলন এখন স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে চলে গেছে।” আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ‘প্রস্তুত থাকার’ নির্দেশ দেন এবং বলেন, “অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আমাদের জবাব দিতেই হবে।”

১৭ জুলাই ঢাকাসহ রংপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গায়েবানা জানাজা, বিক্ষোভ, অবরোধের পাশাপাশি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়। চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত জানাজায় হাজারো ছাত্র ও জনতা অংশ নেয়। ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিএনপির গায়েবানা জানাজাও পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।

একদিকে প্রশাসনের দমননীতি, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়াশীল ও সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ—সব মিলিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজপথে এক অনির্ধারিত উত্তপ্ত অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। আন্দোলনের নেতৃত্ব ঘোষণা দিয়েছে—দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পিছু হটবে না।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ