বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার আসছে ফাজিল পরীক্ষায় অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা হুঁশিয়ারি ইআবির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তরুণ কলাম লেখক ফোরামের নেতৃত্বে মোফাজ্জল–সামিন শুক্রবার ইসলামী আন্দোলনের আন্তর্জাতিক সিরাত কনফারেন্স, সফল করার আহ্বান ভোলায় শিবির নেতার উপর হামলা, অবস্থা আশঙ্কাজনক রাহমাহ ফাউন্ডেশনের শিক্ষা-উপকরণ বিতরণ নতুন এয়ালাইন্সের ফ্লাইট চালু, কম খরচে সৌদি যাতায়াতের সুযোগ এনসিপিকে জুলাই সনদে সাক্ষরের আহ্বান করেছে সরকার সাম্প্রদায়িক ধর্ষণ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন

প্রাকৃতিক দূর্যোগে মানুষকে সহযোগিতা করাও ইবাদত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুর্গত ও অসহায়দের সাহায্য-সহযোগিতা একদিকে শ্রেষ্ঠতম ইবাদত অন্যদিকে ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বিপদ-মসিবত, ভয়, ক্ষুধা ইত্যাদি দিয়ে পরীক্ষা করেন।

পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) তোমাদের ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। তুমি ধৈর্যশীলদের শুভ সংবাদ দাও, যারা তাদের ওপর বিপদ আপতিত হলে বলে, ‘আমরা তো আল্লাহরই জন্য এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’ (সুরা বাকারা: ১৫৫-১৫৬) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোনো বিপদই আপতিত হয় না।’ (সুরা তাগাবুন: ১১)

বন্যা, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টিসহ সকল দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশা দাঁড়াতে উৎসাহিত করে ইসলাম। এটি একটি উৎকৃষ্ট নেক আমল। নিজের জীবন যেন বিপন্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে অপর ভাইয়ের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আর্থিক ও শারীরিকভাবে যতটুকু সাধ্যে কুলোয় ততটুকু সহযোগিতা করতে হবে।

রাসুল সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে দুনিয়ার বিপদসমূহের মধ্যকার কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করবে, এর প্রতিদানে আল্লাহ কেয়ামতের দিনের বিপদসমূহের কোনো বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন। দুনিয়ায়ও আল্লাহর দয়া পেতে অন্য ভাইয়ের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবীজি সা. বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ সে অপর ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।’ (মুসলিম: ২৩১৪)। হাদিসে আরও এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’ (বুখারি: ১৭৩২)

মহান আল্লাহর ওপর সবাইকে অগাধ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, তিনি অবশ্যই বান্দার জন্য কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন এবং তিনিই বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন এবং সাময়িক বিপদের বিনিময়ে আরও উত্তম কোনো নেয়ামত দিয়ে পুরস্কৃত করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের রবের পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়, আর তারাই সৎপথে পরিচালিত।’ (সুরা বাকারা: ১৫৬-১৫৭)

মনে রাখতে হবে, কখনো মানুষের গুনাহের কারণেও বিভিন্ন বিপদ আসে। তাই বিপদ আসার আগে তওবা-ইস্তেগফারে অভ্যস্ত হতে হবে, আল্লাহভীতি গুণ অর্জন করতে হবে। আর আল্লাহ তায়ালার কাছে সবসময় দোয়া করতে হবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য নিষ্কৃতির পথ তৈরি করে দেন।’ (সুরা তালাক: ০২)

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ধৈর্যধারণ করা। কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরা নবী-রাসুলদের গুণ। সবরকম কষ্ট-বাধা-সমস্যার বিপরীতে শক্ত থেকে দায়িত্ব শেষ করাই হচ্ছে ধৈর্য। এতে দুনিয়ার বিপদ থেকে যেমন সহজে মুক্ত হওয়া যায়, আখেরাতেও পুরস্কার পাওয়া যায়। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সফলকাম বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তাদেরকে তাদের ধৈর্যের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে তারাই সফলকাম।’ (সুরা: মুমিনুন: ১১১)

অতএব, প্রাকৃতিক যেকোনো দুর্যোগে এগিয়ে আসতে হবে সামর্থ্যবানদের। উদ্ধার সরঞ্জাম, টাকা-পয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানবিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা! আমি তোমাদের যে জীবনের উপকরণ দিয়েছি, তা থেকে তোমরা ব্যয় করো সেদিন আসার আগেই যেদিন কোনো বেচাকেনা, বন্ধুত্ব এবং সুপারিশ থাকবে না।’ (সুরা বাকারা: ২৫৪)

আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে একে অন্যের বিপদে এগিয়ে আসার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ