রবিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


কওমি আলেমদের জ্ঞান-বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভের সুযোগ অবারিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতী মুঈনুল ইসলাম

একজন কওমি আলেমের জ্ঞান বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভের সুযোগ থাকে অবারিত। এর অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম হলো, একজন কওমি আলেম তাঁর পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমেই যুগ যুগান্তরের ঐতিহ্যমণ্ডিত একাধিক ভাষা, সাহিত্য ও সভ্যতার সাথে পরিচিত হয়ে উঠতে পারেন, যা এদেশের প্রচলিত অন্য শিক্ষাব্যবস্থায় সুযোগ নেই।

এখানে আরেকটি বিষয় হলো, ভালোভাবে একটি ভাষা রপ্ত করতে পারলে একাধিক ভাষা রপ্ত করা সহজ হয়ে যায়। কারণ, একটি আমের এক পিঠে যদি টক হয়, তাহলে আরেক পিঠ স্বাভাবিকভাবেই টক হবে। ভাষার কল-কব্জা প্রায় একই রকম। বিষয়টি সকল ভাষার ক্ষেত্রেই শতভাগ বাস্তব না হলেও ৯০ ভাগই বাস্তব।

এভাবেই একজন কওমি আলেম কমপক্ষে চারটি ভাষার ওপর তথা বাংলা, উর্দু , আরবি ও ফারসি ভাষায় প্রায় পূর্ণাঙ্গ দক্ষ হয়ে ওঠার সুযোগ থাকে পাঠ্যসূচির মাধ্যমেই এবং তাঁর পাঠগৃহেই। ভিন্নভাবে অন্য কোনো প্ল্যাটফর্মে কিংবা ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে যেতে হয় না। আর একজন মানুষ যখন কোনো ভাষা শিখে যান, তখন তিনি সে ভাষার জ্ঞানী গুণীদের চিন্তা চেতনা, গবেষণা-লব্ধ নানা বিষয়, বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষসহ আরও অনেক বিষয় অনায়াসে শিখতে পারেন এবং জানতে পারেন।

আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভাষা ইংরেজি শেখা তাঁর জন্য কয়েক মাসের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

এমতাবস্থায় খুব স্বাভাবিকভাবে বলা যায় যে, একজন সচেতন, অভিজ্ঞ, সমাজ ও রাষ্ট্রমুখী কওমি আলেম অন্য সিস্টেমের শিক্ষিত ব্যক্তির থেকে সার্বিক মূল্যায়নে তিনি শ্রেষ্ঠত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হতে সক্ষম হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান। এটাই সত্যাসত্য, এটাই বাস্তবতা, এটাই হাজারো দেখা অভিজ্ঞতার চিত্র।

ফারসি সাহিত্যে একটি প্রবাদ আছে। আর তা হলো-

افتاب شد دلیل افتاب-

তরজমা : দিবাকর- সূর্য নিজেই নিজের দলীল।

আরেকটি বিষয় কওমি মাদরাসায় বিদ্যমান। আর তা হলো, কওমি মাদরাসায় চারটি জিনিস পাওয়া যায়, যা অন্য শিক্ষালয় ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। যথা-০১. [সনদভিত্তিক] তালিম। ০২.তারবিয়াত।০৩.সোহবত। ০৪.আমল।

উল্লেখ্য,আমাদের এদেশে অন্যান্য শিক্ষাব্যবস্থা অনেক দিন যাবত উপনিবেশিক ব্রিটিশ দ্বারা শাসিত, রচিত ও পরিচালিত হয়েছে। এটির বাস্তবমুখী করণ ও ইসলামাইজেশন অবশ্যই সময়ের দাবি। এমনিভাবে কওমি মাদরাসার শিক্ষাব্যবস্থাকেও  যুগোপযোগীকরণ সময়ের অন্যতম দাবি। এটি একটি ভিন্ন সাবজেক্ট।

লেখক: প্রিন্সিপাল ও রেক্টর, জামিয়া ইসলামিয়া ঢাকা; বহু গ্রন্থপ্রণেতা

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ