ব্যক্তিত্বের নৈতিক সংস্কার ও আত্মশুদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে তাবলিগ জামাতের প্রথম রংপুর বিভাগীয় ইজতেমা শুরু হয়েছে। বিশাল ৮০ একর মাঠজুড়ে সাজানো ইজতেমা প্রাঙ্গণে ইতোমধ্যেই কয়েক লাখ মুসল্লির উপস্থিতিতে তিল ধারণের জায়গা নেই।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত থেকেই ইজতেমার মাঠ মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে মাওলানা আব্দুল কাদেরের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী এ বিভাগীয় ইজতেমা। আয়োজকদের ধারণা, শুক্রবার জুম্মার নামাজে অংশ নিতে আরও লক্ষাধিক মুসল্লি যোগ দিতে পারেন। শনিবার দুপুর ১২টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের ইজতেমা।
রংপুর নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আমাশু কুকরুল এলাকায় মাসব্যাপী প্রস্তুতির মাধ্যমে বিস্তীর্ণ মাঠকে ইজতেমা উপযোগী করা হয়েছে। বুধবার দুপুর থেকেই মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন এবং রাতের মধ্যেই নিজ নিজ জেলা–উপজেলা ভিত্তিক খিত্তায় অবস্থান নেন।
আয়োজক কমিটির তথ্য অনুযায়ী, রংপুর বিভাগের আট জেলার সাথিরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৪০ দিনের চিল্লায় থাকা সাথিরা অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষাধিক মুসল্লির সমাগম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২০০ বিদেশি মেহমান ইজতেমায় যোগ দিয়েছেন।
ইজতেমার নির্বিঘ্ন আয়োজন নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি শতাধিক জেনারেটর প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মুসল্লিদের ওজু ও গোসলের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও ট্যাপের ব্যবস্থা রয়েছে—যেখানে একসঙ্গে কয়েক হাজার মানুষ ওজু করতে পারবেন। স্বাস্থ্যসেবার জন্য অর্ধশতাধিক মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক মাঠে নিয়োজিত রয়েছে।
নিরাপত্তার বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে। সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি, কন্ট্রোল রুম স্থাপন ও সার্বক্ষণিক তদারকি চলছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, বিভাগীয় পর্যায়ে এবারই প্রথম ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বিঘ্ন আয়োজনে আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে পুলিশ। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে।
এনএইচ/