মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা, ফরিয়াদ, অনুরোধ ও ক্ষমা চাওয়াই হচ্ছে বান্দার বড় একটি ইবাদত। বান্দা আল্লাহর কাছে যত বেশি চাইবে, আল্লাহ তত বেশি খুশি হন এবং অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। আল্লাহ চান, তাঁর বান্দা জীবনের প্রতিটি বিষয়েই তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুক। আর মানুষ তো ভুল করে, অপরাধে লিপ্ত হয়—সে জন্য ক্ষমা প্রার্থনার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে দোয়া। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য এক মহান নেয়ামত। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, দোয়া হলো ইবাদতের মূল। (তিরমিযি, হাদিস: ৩৩৭১)
দোয়া কবুলের শর্ত ও আদব:
দোয়া কবুলের জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত, আদব ও সময় রয়েছে। যদি বান্দা সেসব নিয়ম অনুসরণ করে আন্তরিকতা ও একাগ্রতায় দোয়া করে, তবে আল্লাহ তা কবুল করেন। হাদিসে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের কথা উল্লেখ আছে, যখন দোয়া কবুল হওয়া নিশ্চিত বা সম্ভাবনাময়।
হাদিসে দোয়া কবুলের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তসমূহ
১. রাতের শেষ তৃতীয়াংশ:
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ তায়ালা আসমান দুনিয়ার সবচেয়ে নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: কে আমাকে ডাকছে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব; কে কিছু চাইছে, আমি তাকে তা দেব; কে ক্ষমা চাইছে, আমি তাকে ক্ষমা করব।” (সহিহ মুসলিম)
২. জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্ত:
রাসুল (সা.) বলেন, “জুমার দিনে একটি বিশেষ সময় রয়েছে, যদি কোনো মুসলিম সে সময়ে নামাজে লিপ্ত থেকে আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তা কবুল করবেন।” (সহিহ বুখারি)
৩. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়:
রাসুল (সা.) বলেন, “আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে করা দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।” (তিরমিজি)
৪. সেজদারত অবস্থায়:
রাসুল (সা.) বলেন, “বান্দা যখন সেজদায় থাকে, তখন সে আল্লাহর সবচেয়ে নিকটে থাকে। তাই তোমরা সে সময়ে বেশি বেশি দোয়া কর।” (সহিহ মুসলিম)
৫. জমজমের পানি পানকালে:
রাসুল (সা.) বলেন, “জমজম পানি যে নিয়তে পান করা হয়, তা পূরণ হয়।” (ইবনে মাজাহ)
অতএব, প্রতিনিয়ত দোয়া করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং উল্লিখিত সময়গুলোকে কাজে লাগানো একজন মুসলমানের উচিত। কারণ, দোয়া আল্লাহর সঙ্গে সংযোগের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম, আর ক্ষমা প্রার্থনা হলো সেই সংযোগের অন্তরঙ্গ রূপ।
এমএইচ/