মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
সহিহ বুখারী শরীফে আছে রাসূলুল্লাহ (সা.) নারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, 'তোমাদের জিহাদ হচ্ছে-হজ ’। হজ ইসলামের পঞ্চম বুনিয়াদের একটি। সামর্থবান প্রত্যেক নর-নারীর উপর হজ করা ফরজ। তবে নারীদের হজ পালন কিছু বিশেষ নিয়ম দ্বারা নির্ধারিত। ইসলামী শরিয়তই নারীদের দিয়েছে ভিন্ন কিছু নির্দেশনা।
এক. রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'কোনো নারী যেন মাহরাম ছাড়া সফর না করে। এটা তার জন্য বৈধ নয়।’ তাই নারী সামর্থ্যবান হলেও মাহরাম না থাকলে তার জন্য হজ ফরজ নয়। সাথে মাহরাম থাকা এটা নারীদের হজের প্রধান শর্ত।
দুই. হজে নারীর ইহরামের পোশাকের ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। নারীর ইহরাম যেকোনো রঙের হতে পারে। তবে সেটা যেন অবশ্যই অশ্লীল এবং উত্তেজক না হয়।
তিন. ইহরাম বাধার পর যেকোনো ধরনের সুগন্ধী নারীর জন্য হারাম হয়ে যায়। সুগন্ধী ছাড়াও শরীরের যেকোনো চুল তুলে ফেলা না জায়েজ। হারাম নখ কাটাও।
চার. রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন 'হজে নারী নিকাব পরবে না, মোজা পরবে না।’ তাই ইহরামকারী নারীর জন্য নিকাব পরা, হাত মোজা পরা হারাম। তবে নিকাব না পরলেও কাপড় বা আচল দিয়ে নারী তার চেহারা ও হাত ঢেকে রাখতে পারবেন।
পাঁচ. হজে একজন নারী সেলোয়ার কামিজ, পা মোজা, স্বর্ণালংকার, ঘড়ি ইত্যাদি পরতে পারবে। তবে সেগুলো যেন বেগানা পুরুষের সামনে সৌন্দরয প্রদর্শনের জন্য না হয়।
ছয়. হজে নারী হায়েয হলে সেটা ইহরামের প্রতিবন্ধক নয়। এ অবস্থায় একজন নারী তাওয়াফ ব্যতিত হজের সব আমলই করতে পারবেন।
সাত. হজে উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়া নারীদের জন্য বারণ। একজন নারী এমনভাবে তালবিয়া পড়বেন যাতে শুধু নিজে এবং আশপাশের মহিলার শুনতে পান।
আট. হজের সব ধরনের কার্যাবলী পালনের সময় নারীরা পুরুষদের ভিড় এড়িয়ে চলবেন। যখন ভিড় কম থাকে নারীরা সেই সময় গুলোই বেছে নিবেন।
নয়. তাওয়াফের রমল ও সাঈ-এর দৌড় পুরুষদের উপর সুন্নাত হলেও নারীদের উপর তাওয়াফের রমল সাঈ-এর দৌড় আবশ্যক নয়। তাছাড়া ফজরের আগে পুরুষের জন্য মুযদালিফা ত্যাগ করা নাজায়েজ হলেও নারীর জন্য জায়েজ।
দশ. প্রত্যেক হাজিকেই বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয়। কিন্তু ইসলামি শরীয়ত হায়েযগ্রস্থ নারীদের বিশেষ ছাড় দিয়েছে। তাই হায়েযগ্রস্থ নারীর উপর বিদায়ী তাওয়াফ নেই।
এনএইচ/