বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৩০ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামায়াতের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ময়মনসিংহে ইসলামি বইমেলা শুরু ১৩ নভেম্বর ভারতের পুনে দুর্গে নামাজ আদায় করা নিয়ে দেশভর তোলপাড় ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের আরও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: শায়খে চরমোনাই কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত 'বাংলাদেশ' নামের পত্রিকা : স্বাধীনতার ৩৩ বছর আগের এক ঐতিহাসিক দলিল ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিল হওয়ার খবরটি ভুল : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নাতির কাছে কায়দা শিখছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর জামায়াত সেক্রেটারি পরওয়ারের বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ: এনসিপি ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস এ৩৩০ সম্পন্ন হলো আবু ত্বহা ও সাবিকুন নাহারের তালাক

মানসিক শান্তি লাভের আমল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মানসিক শান্তি মহান আল্লাহর অমূল্য নিয়ামত। এটি শুধু অর্থ-সম্পদ ও স্ত্রী-সন্তান দিয়ে লাভ করা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ যদি কারো মন থেকে প্রশান্তি কেড়ে নেন, সে গোটা দুনিয়ার সব ভোগ-বিলাসের বস্তু পেলেও সুখ অনুভব করবে না, আবার কাউকে যদি দয়া করে প্রশান্ত অন্তর দান করেন, সে শত অভাব-অনটনে কিংবা সীমাবদ্ধতায়ও অশান্তি অনুভব করবে না। 

কেউ গাছতলায় শুলেও পরম সুখের ঘুমে চোখ বুজে আসে, আবার কেউ কোটি টাকার খাটে শুয়েও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে না। তাই মানসিক শান্তি পেতে মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনার বিকল্প নেই। নিম্নে কোরআন-হাদিসের আলোকে মানসিক শান্তি লাভের কিছু আমল তুলে ধরা হলো-

জিকির : 

আল্লাহর জিকির হলো, আত্মার খোরাক। জিকিরের মাধ্যমে আত্মা উর্বর হয়, প্রশান্ত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘জেনে রাখো, আল্লাহর জিকিরেই হৃদয় প্রশান্ত হয়। ’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২৮)।

তাফসিরবিদদের মতে, জিকির দ্বারা উদ্দেশ্য নামাজ, নফল ইবাদত, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, তাসবিহ উদ্দেশ্য হতে পারে। সবই মুমিনের হৃদয়ের খোরাক।

নামাজ : 

নবীজি (সা.) নামাজে প্রশান্তি লাভ করতেন। তিনি বলেছেন, ‘নামাজে রাখা হয়েছে আমার চক্ষুর শীতলতা। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩৯৪০)। যারা আল্লাহর ওপর ঈমান রাখে, নবীজি (সা.)-কে ভালোবাসে। তারাও যদি বিশুদ্ধ ঈমান, খুশুখুজু ও মহব্বত নিয়ে নামাজে দাঁড়াতে পারে, তাহলে তারাও প্রশান্তি অনুভব করবে ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহর ওপর ভরসা : 

আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা স্থাপন করলে হতাশা কাবু করতে পারে না, মানসিক শান্তি ছিনিয়ে নিতে পারে না। মানুষ বেশির ভাগ সময় অশান্তি ও হতাশায় ভোগে অদৃশ্য ভয় থেকে, কিছু অভাবের ভয়, হারানোর ভয়, বেদনার ভয়, বিপদের ভয়- যার সবই আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। যারা আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা ও ভরসা স্থাপন করতে পারে, তাদের জন্য আল্লাহ যথেষ্ট হয়ে যান।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৩)।

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা যদি প্রকৃতপক্ষেই আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হতে তাহলে পাখিদের যেভাবে রিজিক দেওয়া হয় সেভাবে তোমাদেরও রিজিক দেওয়া হতো। এরা সকালবেলা খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৪)।

মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করা ও হাস্যোজ্জ্বল থাকা :

সদা হাস্যোজ্জ্বল থাকা এবং মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করা মনকে প্রশান্ত রাখতে সাহায্য করে। এতে সমাজে যেমন মানুষের ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়, তেমনি মন ও মস্তিষ্কে এর উপকারী প্রভাব পড়তে থাকে। নবীজি (সা.) বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া সদকাস্বরূপ। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৫৬)।

সদকা : 

সদকার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আর্থিক সমৃদ্ধি আসে। এ দুটি বিষয় একসঙ্গে অর্জিত হলে অন্তর প্রাচুর্যময় হওয়া স্বাভাবিক। 

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মতো, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে এক শ দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৬১)।

শোকর আদায় করা : 

অনেক সময় বান্দার না শুকরিয়ামূলক আচরণের কারণে তাদের ওপর বহু বিপদ-আপদ নেমে আসে। সব পেয়েও শূন্যতায় ভোগে। তাই প্রকৃত শান্তি পেতে সর্বাবস্থায় আল্লাহর শোকর আদায় করার বিকল্প নেই। 

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, তবে আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৭)।

আখিরাতকে প্রাধান্য দেওয়া : 

মহান আল্লাহ মূলত আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদতের জন্য। আমাদের উচিত আমাদের মূল কাজকে সব কিছুর ওপর গুরুত্ব দেওয়া। এর ব্যতিক্রম করলে অশান্তি আসা স্বাভাবিক। 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতে মগ্ন হও। আমি তোমার অন্তরকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করব এবং তোমার দারিদ্র্য দূর করব। তুমি যদি তা না করো, তাহলে আমি তোমার অন্তর হতাশা দিয়ে পূর্ণ করব এবং তোমার দরিদ্রতা দূর করব না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১০৭)।

মহান আল্লাহ আমাদের সবার অন্তরকে প্রশান্তি দান করুন। জীবনের মূল্যবান সময়গুলোকে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনে ব্যয় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ