মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামায়াতের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ময়মনসিংহে ইসলামি বইমেলা শুরু ১৩ নভেম্বর ভারতের পুনে দুর্গে নামাজ আদায় করা নিয়ে দেশভর তোলপাড় ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের আরও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: শায়খে চরমোনাই কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত 'বাংলাদেশ' নামের পত্রিকা : স্বাধীনতার ৩৩ বছর আগের এক ঐতিহাসিক দলিল ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিল হওয়ার খবরটি ভুল : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নাতির কাছে কায়দা শিখছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর জামায়াত সেক্রেটারি পরওয়ারের বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ: এনসিপি ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস এ৩৩০ সম্পন্ন হলো আবু ত্বহা ও সাবিকুন নাহারের তালাক

মা-বাবার সেবা জিহাদের চেয়ে উত্তম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| নাজমুল হুদা মজনু ||

অনেক আবেদ ব্যক্তি আছেন যারা সালাত-সিয়াম‌ ও জিকির -আসকারে বেশ অগ্রগামী; কিন্তু পারিবারিক, সামাজিক-রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে অনগ্রসর।

এ ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআন মাজিদে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন,
'তোমরা কি (এ কথা) মনে করে নিয়েছো, তোমাদের (এমনি এমনিই) ছেড়ে দেয়া হবে! অথচ (এখনো) আল্লাহ তায়ালা (ভালো করে) পরখ করে নেননি যে, তোমাদের মাঝে কারা (আল্লাহর পথে) জিহাদ করেছে, আর কারা আল্লাহ তায়ালা, তার রাসূল ও মুমিনদের ছাড়া অন্য কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে, (বস্তুত) তোমরা যা কিছু করো না কেন, আল্লাহ তায়ালা সে সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছেন। (আত-তাওবাহ : ১৬)

আল্লাহর রাস্তায় জানমাল দিয়ে সংগ্রাম করতে গিয়ে অনেক সময় প্রতিকূল পরিবেশে দ্বীনের কাজ ব্যাহত হয়। বিশেষ করে দ্বীনবিরোধী শক্তি যখন প্রচণ্ড হয়ে যায়। এমনকি মাতৃভূমিতে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

তখন হিজরত করা ফরজ হয়ে যায়। আমরা কী অবস্থায় আছি সেই ভাবনা কি আমাদের আছে?

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন-
'যারা নিজেদের ওপর জুলুম করে, তাদের প্রাণ হরণের সময় ফেরেশতারা বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে? তারা বলে, দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম। তারা বলে, তোমরা নিজ দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে বসবাস করতে পারতে, আল্লাহর জমিন কি এমন প্রশস্ত ছিল না?

এদের বাসস্থান হলো জাহান্নাম। আর তা কতই না নিকৃষ্ট বাসস্থান। তবে যেসব পুরুষ, নারী ও শিশু কোনো উপায় অবলম্বন করতে পারে না এবং কোনো পথও পায় না তাদের কথা ভিন্ন। আল্লাহ হয়তো তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মার্জনাকারী, পরম ক্ষমাশীল’’। (সূরা আন-নিসা : ৯৭-৯৯)

দুনিয়ার বিভিন্ন আসবাব, প্রিয়জন ও পছন্দ-অপছন্দ থাকা মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। তবে আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল মুমিনের জীবনের চেয়ে প্রিয় হ‌ওয়া আবশ্যক।

এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা জোর দিয়ে বলেছেন-
'(হে নবী,) বলো, যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের ভাই, তোমাদের পরিবার- পরিজন ও তোমাদের অর্জিত ধনসম্পদ এবং ব্যবসাবাণিজ্য, যা অচল হয়ে যাবে বলে তোমরা ভয় করো, তোমাদের বাড়িঘর, যা তোমরা (একান্তভাবে) কামনা করো, যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালা, তার রাসূল ও তার পথে জিহাদ করার চেয়ে (এগুলোকে) বেশি ভালোবাসো, তাহলে তোমরা আল্লাহ তায়ালার (পক্ষ থেকে তার আজাবের) ঘোষণা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। (জেনে রেখো); আল্লাহ তায়ালা কখনো ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়াত করেন না। (আত-তাওবাহ : ২৪)

পরিবার-পরিজনকে ছেড়ে সন্ন্যাসব্রত পালন করা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।

হাদিসে এসেছে—
'এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, আমি জিহাদে যেতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার পিতামাতা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। নাবী  সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তবে তাঁদের খিদমতের চেষ্টা করো।’ (বুখারি-৩০০৪; মুসলিম-২৫৪৯)

সমাজের অন্যায় অসঙ্গতি দুর্গতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ।

কুরআন মাজিদে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন-
'হে মানুষ, তোমরা যারা (আল্লাহ তায়ালার ওপর) ঈমান এনেছো, এ কি হলো তোমাদের! যখন তোমাদের আল্লাহ তায়ালার পথে (কোনো অভিযানে) বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা জমিন আঁকড়ে ধরো; তোমরা কি আখেরাতের (সমৃদ্ধির) তুলনায় (এ) দুনিয়ার জীবনকেই বেশী ভালোবাসো, (অথচ) পরকালে (হিসেবের মানদণ্ডে) দুনিয়ার জীবনের এ ভোগের উপকরণ নিতান্তই কম। (আত-তাওবাহ : ৩৮)

ক্ষেত্রবিশেষে আল্লাহর পথে জিহাদ করার চেয়ে বাবা- মায়ের সেবা করাই উত্তম। একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ জাল্লা শানহু বলেন,
'তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না, মা-বাবার সাথে সদ্ব্যবহার করো, মা-বাবার কোনো একজন কিংবা উভয়ে যদি তোমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের ‘উফ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদের ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলো।’ (সূরা বনি ইসরাইল : ২৩)

লেখক : গবেষক ও সাংবাদিক

এনএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ