তানভীর সিরাজ
দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক অপসংস্কৃতির ব্যস্তসময় পার করে আসছি আমরা। এ যে দেখুন, বর্তমানে আমাদের একটি অমূলক ধারণা হল, রমজান-ঈদে কেনাকাটা, ঈদ-শপিং করতেই হয়। শপিং করাকে আমি অপছন্দও করি না, কারণ শপিং না করাও কিন্তু সুন্নত পরিপন্থী কাজ, তাই আমার বিশ্বাস কেনাকাটা করা আর সাজসজ্জা করা সুন্নত।
সাজসজ্জাই মানুষকে সুন্দর দেখায়। আল্লাহ তায়ালা নিজে যেমন সুন্দর, তেমনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন তিনি। তাই বলি ঈদে শপিং নিন্দিত কিছুই নয়, বরং নন্দিত বিষয়।
তবে আমাদের কর্মপন্থাই সব সমস্যার মূল। রমজানেই যে ঈদ-শপিং করতে হবে তা কিন্তু নিতান্তই ভুল ধারণা, বরং রমজান তো হল ইবাদত বন্দেগীতে অতিবাহিত করার মাস।
এ মাসে ইবাদত-বন্দেগি করে করে ফেরেশতার সওদাগরিতে জান্নাতি দোকান থেকে বাজার করবেন এবং এরই সুবর্ণ সুযোগ মাহে রমজান।
আল্লাহর খাছ বান্দাগণ এ ক্রয়ের অপেক্ষায় থাকেন আর পুরা একমাসে রাতদিন চব্বিশঘণ্টা আল্লাহর দেয়া বাজার থেকে সম্মানিত ফেরেশতাদের কাছ থেকে ইচ্ছামত সদাই করেন।
তাই বলি, জান্নাতি শপিং-এর মাস রমজান মাস। আর সে জন্যই এই মাসের দিবারাত্রিকে ইবাদতের বসন্ত বলা হয়। তাহলে দুনিয়াবি ঈদ শপিং কবে করবে গতানুগতিক ক্রেতাসাধারণ? প্রায় সময় এর উত্তর আমি যেভাবে দিই।
‘আমরা পবিত্র মাহে রমজান আসার আগে আগেই দুনিয়াবি ঈদ শপিং সেরে নিব। পারলে মাস দু'এক আগে।’ কারণ রাসূল সা. রমজানের মাস দু'এক আগে থেকেই রমজান মাসকে পাওয়ার ফরিয়াদ করতেন এবং তার সাথে সাথে তার প্রস্ততি গ্রহণ করতেন।
তবে পর্দার বিষয় সবসময় তো সামনেই রাখতে হবে। পিছনে রাখলে তো চোখ শীশাঢালা শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। আর এইমাসকে আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেন, আমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি করার এবং নিজেদেরকে আত্মসংযমী রূপে গড়ে তুলার মাস।
নবি সা. সাহাবাগণকে সুসংবাদ দিয়ে বলতেন- ‘রমজানের প্রথম রাতে দুষ্ট শয়তানকে শৃঙ্খলিত করে দেওয়া হয়। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। জাহান্নামের সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কল্যাণের প্রতি আহবান করা হয় এবং অকল্যাণকে বিতাড়িত করা হয়। রমজানের প্রতি রাতেই অসংখ্য মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস- ৬৮২)
মহান সংস্কারক হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আশরাফ আলী থানবী রা. বলতেন, ‘পিছনের সমস্ত গোনাহ থেকে তাওবা এবং বাকি জীবন আল্লাহর হুকুমমত চলার নতুন প্রতিজ্ঞা করার মাস।’
সেখানে আমরা যদি মাহে রমজানের মতন অমূল্য এই হীরকখণ্ডকে ঈদী শপিং-এর মাসে নির্ধারণ করি, তাহলে তা ভিত্তিহীন বাতুলতা নয় কি ?!
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        