|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||
স্ত্রীর পরামর্শ ও সমর্থন যে স্বামীর জীবনে সফলতার অন্যতম গোপন চাবিকাঠি—তা আজ আর শুধু পারিবারিক গল্প নয়, বরং গবেষণালব্ধ বাস্তবতা। পরিবার একটি ছোট্ট প্রতিষ্ঠান, যেখানে একজন স্ত্রী শুধু সঙ্গিনীই নন, বরং তিনি একজন নীরব প্রেরণাদাত্রী, জীবনদর্শনের সহচর, এবং অনেক সময় সিদ্ধান্ত গ্রহণে নির্ভরযোগ্য পরামর্শদাতা হয়ে ওঠেন।
বর্তমান গবেষণাগুলো বারবার দেখাচ্ছে, কর্মজীবনে স্বামীর মনঃসংযোগ, মানসিক স্থিতি এবং আত্মবিশ্বাস—সবকিছুতেই স্ত্রীর ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। সুখী দাম্পত্য জীবনের প্রভাব শুধু ঘরোয়া পরিবেশেই নয়, বরং তা ছড়িয়ে পড়ে কর্মক্ষেত্রেও। তাই বলা যায়, একজন স্ত্রীর উপলব্ধি, সহযোগিতা ও উপদেশ—একজন স্বামীর সফলতার নেপথ্য নায়ক হিসেবেই কাজ করে।
Forbes-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সঙ্গীর সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতা স্বামীর পেশাগত উন্নতিতে সহায়ক। এটি তিনটি প্রধান উপায়ে কাজ করে:
গৃহস্থালির দায়িত্ব ভাগাভাগি: সচেতন স্ত্রী গৃহস্থালির কাজগুলো ভাগ করে নেন, যা স্বামীকে তার পেশাগত কাজে মনোযোগী হতে সাহায্য করে।
সুস্থ অভ্যাসের অনুকরণ: স্ত্রীর দায়িত্বশীল আচরণ স্বামীকে অনুপ্রাণিত করে, যা তার কর্মজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মানসিক স্থিতি বজায় রাখা: স্ত্রীর সহানুভূতি ও সমর্থন স্বামীর মানসিক চাপ কমায়, যা কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল
PubMed-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মজীবনে সঙ্গীর সমর্থন কর্ম-জীবন ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে সুষম ভারসাম্য রক্ষা করে, যা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্যই সন্তোষজনক।
আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর সচেতনতা স্বামীর চাকরির সন্তুষ্টি, আয় এবং পদোন্নতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।
দাম্পত্য জীবনে সুখের গুরুত্ব
Rutgers University-এর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, স্ত্রীর সুখ স্বামীর জীবনের সন্তুষ্টির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন স্ত্রী দাম্পত্য জীবনে সন্তুষ্ট থাকেন, তখন তিনি স্বামীর জন্য আরও অনেক কিছু করেন, যা স্বামীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এই গবেষণাগুলি প্রমাণ করে যে স্ত্রীর পরামর্শ ও সমর্থন স্বামীর পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে সফলতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুস্থ দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারস্পরিক সমর্থন ও বোঝাপড়া অপরিহার্য।
এসএকে/