রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫ ।। ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১৬ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
নোয়াখালীতে আগুনে পুড়ল ১১ দোকান ও ১ কারখানা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা কিনছে সরকার খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আন্তর্জাতিক মহাসমাবেশ ১৫ নভেম্বর নান্দাইলের চন্ডিপাশা ইউনিয়ন ইমাম-উলামা পরিষদের আত্মপ্রকাশ কুমিল্লায় জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও তারুণ্যের ভাবনা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত পুনঃনিরীক্ষণে দাখিলে আরও ৯৯১ শিক্ষার্থী পাস এক মাসে হারামাইনে আগমন ঘটেছে ৬ কোটির বেশি মুসলিমের ৮৮ দিনে কুরআন হিফজ করে প্রশংসায় ভাসছে ৭ বছরের ফাহিম গাজা দখল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান তুরস্কের ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কি ঘুরে দাঁড়াবে?

রোজা কাকে বলে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুহিউদ্দীন মাআয ||

‘রোজা’(روزہ) একটি ফারসি শব্দ। অর্থ উপবাস বা বিরত থাকা। এটাকেই আরবিতে সিয়াম বা সওম বলে। শরীয়তের পরিভাষায় ‘রোজা’ বলা হয়, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া-পানকরা ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকা। এ রোজা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি পবিত্র বিধান। রোজার মাধ্যমে মুমিনের আত্মিকগঠন, চারিত্রিক দৃঢ়তা, নৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সাম্যের নিশ্চয়তা বৃদ্ধি পায়।  

রোজা রাখার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা, পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং নিজের কামনা-বাসনা নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরহেজগারি বা তাকওয়া বৃদ্ধি করা।
কুরআনে বলা হয়েছে,
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো"। (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)
আরও বলা হয়েছে,
"রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে সে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না। আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।”(সূরা বাকারা: ১৮৫)
উল্লিখিত ‘তাকওয়া’ শব্দটির মূল অর্থ ‘রক্ষা করা।’ এর অনুবাদ করা হয়েছে নানাভাবে। যেমন পরহেজগারি, আল্লাহর ভয়, দ্বীনদারি, সৎ কর্মশীলতা, সতর্কতা প্রভৃতি। রোজা ঢালের মতো কাজ করে, যা গোনাহের হাত থেকে বাঁচায়।
রোজার বিধান আল্লাহ তায়ালা শুধুমাত্র শেষ নবীর উম্মতের প্রতিই নয়, বরং পূর্বের নবী-রাসুলদের উম্মতের প্রতিও দিয়েছিলেন। কোরআনে রোজার বিধান সম্বলিত আয়াতে একথা স্পষ্ট হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন—, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমাদের জন্য সিয়াম (রোজা) বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)।
তবে পূর্ববর্তী উম্মতের রোজা বিভিন্ন ধরণের ছিল। যেমন:-যখন ঈসা আ.-এর  জন্ম হয়, তখন লোকজন তাঁর মা মরিয়মকে তাঁর জন্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তরে বলেছিলেন, ‘আমি করুণাময়ের উদ্দেশ্যে রোজা পালনের মানত করেছি। তাই আজ আমি কিছুতেই কোনো মানুষের সঙ্গে কথা বলব না।’ (সুরা মারয়াম, আয়াত: ২৬)।
 
নুহ আ.-এর যুগেও রোজা পালন করা হতো। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নুহ আ. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা ছাড়া গোটা বছর রোজা রাখতেন।’ (ইবনে মাজাহ)। মহানবী সা. আরও বলেন, ‘নুহ আ.-এর যুগ থেকে প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা ছিল।’ (ইবনে কাসির)
জাহিলি যুগের লোকজন আশুরার রোজা পালন করত। ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘অন্ধকার যুগের লোকজন আশুরার রোজা পালন করত। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে মহানবী সা. নিজে আশুরার রোজা পালন করেছেন। এরপর যখন রমজানের রোজা ফরজ হয়, তখন মহানবী সা. বলেন, ‘আশুরা দিনে যে চায় সে ওই দিন রোজা রাখবে এবং যে চায় সে ওই দিন রোজা পরিহার করবে।’ (বুখারি)
সারা বছরে মানুষ বিভিন্ন সময়ে রোজা রাখলেও কেবল রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। এবং রমজানের রোজার ফযীলতও অনেক বেশী। হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন, বান্দা একমাত্র আমার জন্য তার পানাহার ও কামাচার বর্জন করে, রোযা আমার জন্যই, আমি নিজেই তার পুরস্কার দিব আর (অন্যান্য) নেক আমলের বিনিময় হচ্ছে তার দশগুণ। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ১৮৯৪)
রোযা সম্পর্কে অন্য বর্ণনায়-আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘‘প্রত্যেক ইবাদতই ইবাদতকারী ব্যক্তির জন্য, পক্ষান্তরে রোযা আমার জন্য। আমি নিজেই এর প্রতিদান দিব। (সহীহ বুখারী হাদীস-১৯০৪)
বছরের অন্যান্য দিনও রোজা রাখার ফযীলত হাদীসে বিশেষভাবে বর্ণিত হয়েছে।
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) আইয়ামে বিজের সিয়াম পালন করতেন।’ (নাসায়ি)

এমএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ