ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে নতুন চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আগামী ৫০ দিনের মধ্যে রাশিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত না হলে তাদের ওপর ১০০ শতাংশ ‘সেকেন্ডারি ট্যারিফ’ আরোপ করা হবে। এর আওতায় রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করা তৃতীয় দেশগুলোও মার্কিন শুল্কের মুখে পড়বে।
ওয়াশিংটনে ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই ইউক্রেন স্বাধীনভাবে নিজের অবস্থান নির্ধারণ করতে পারে।”
ট্রাম্প জানান, ন্যাটোর মাধ্যমে ইউক্রেনকে উন্নত সামরিক সরঞ্জাম দেওয়া হবে। ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইউক্রেনকে দেবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সেসবের জায়গায় নতুন প্রতিস্থাপন পাঠাবে।
মার্ক রুটে বলেন, এই সহায়তার মধ্যে থাকবে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদসহ প্রয়োজনীয় অস্ত্র।
ট্রাম্প বলেন, “যদি ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখে, তাহলে ভারতীয় পণ্যের ওপরও ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এতে ভারতীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাবে এবং ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে রাশিয়াও অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়বে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার মোট রপ্তানির ৬০ শতাংশ এবং জাতীয় রাজস্বের এক-তৃতীয়াংশই তেল ও গ্যাস খাত থেকে আসে। সেক্ষেত্রে ট্রাম্পের এই শুল্ক হুমকি বাস্তবায়ন হলে মস্কোর অর্থনীতি বড় ধাক্কা খাবে।
তবে ট্রাম্পের এ ঘোষণার পরপরই মস্কো স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে, যা বিশ্লেষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এক্স-এ দেওয়া পোস্টে তিনি লেখেন, “আমরা এমন সব সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছি, যা আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে এবং রুশ হামলা থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করতে সহায়তা করবে।”
চলতি বছর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দুই দফা শান্তি আলোচনা হলেও তা অচলাবস্থায় গিয়ে ঠেকেছে। মস্কো কিয়েভকে দোষারোপ করেছে, অপরদিকে ইউক্রেন বলছে, রুশ আগ্রাসন থামছে না।
ট্রাম্প এক পর্যায়ে বলেন, “আমি পুতিনকে ঘাতক বলতে চাই না, তবে তিনি একজন কঠোর মানুষ। বহু বছর ধরে তিনি ক্লিনটন, ওবামা, বুশ, বাইডেন—সবারই ভুল ধারণা দিয়েছেন। তবে আমাকে নয়।”
এই প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিলেন। পাশাপাশি পুতিনের প্রতি তার অবস্থান আগের চেয়ে আরও কঠোর হয়ে উঠেছে।
তবে ট্রাম্প ইউক্রেনকেও আক্রমণের জন্য আংশিক দায়ী বলে ইঙ্গিত দেন, যা তার আগের বক্তব্যের ধারাবাহিকতা।
এসএকে/