বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় উপাচার্য একেএম ফজলুল হক ভূঁইয়াকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া তারা ছয় দফা আল্টিমেটাম দিয়েছে এবং দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলন চালানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমতলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি, পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এএইচ এম হিমেল, সাংবাদিকদের সামনে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন।
হিমেল বলেন, শিক্ষার্থীরা বেলা ২টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ প্রত্যাহার, হলগুলোতে সব সুবিধা নিশ্চিত করা, প্রক্টরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ এবং হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
তাদের অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে হামলার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক কৃষি অনুষদের আসাদুজ্জামান সরকার, তোফাজ্জল, শরীফ, রাফি, বজলুর রহমান মোল্লা, মনির, আশিকুর রহমান ও কামরুজ্জামানসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং কম্বাইন্ড ডিগ্রি দ্রুত প্রদান।
হিমেল আরও বলেন, ‘ছয়দফা দাবি গৃহীত না হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলন গড়ে তুলব। প্রয়োজনে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় লকডাউন এবং ব্ল্যাক আউটের মতো পদক্ষেপও নেওয়া হবে।’
এর আগে রোববার দিনভর দাবির মধ্যে প্রায় দুইশ শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ রাখাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটে, যেখানে সাংবাদিক শিক্ষার্থীসহ দশজন আহত হন। পরিস্থিতির তীব্রতা দেখিয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভা রোববার রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি সব ছাত্র-ছাত্রীকে সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
হল ছাড়ার ওই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ‘কে আর’ মার্কেটে জড়ো হন। পরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা ছয় দফার আল্টিমেটাম উপাচার্যকে প্রদান করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল আলীম বলেন, ‘নির্দেশনা অনেকে মেনে চলে গেছে, আবার অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে আন্দোলন করছে। হল খালি হলে সাধারণত দায়-দায়িত্ব লোকাল প্রশাসনের হাতে চলে যায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গেও কথা বলছি। দেখি কি করা যায়।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের নয়টি এবং মেয়েদের পাঁচটি হল রয়েছে। এখানে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজারের মতো।
এমএইচ/