বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ।। ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫


চিরনিদ্রায় শায়িত ‘বাবা হুজুর’ খ্যাত মাওলানা মমতাজুল করিম রহ.

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আদিয়াত হাসান: উম্মুল মাদারিস হাটহাজারীর মাকবারাতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র মুহাদ্দিস ‘বাবা হুজুর’ খ্যাত মাওলানা মমতাজুল করিম রহ.। বাদ আসর মাদরাসা মাঠে জানাযা শেষে আল্লামা হাফেজ শামসুল আলম সাহেব রহ, এর কবরের পাশে দাফন করা হয়।

জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে ৮১ বছর বয়সে রাজধানীর আল কারিম হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসাতে দীর্ঘ ৩৯ বছর (১৯৮৪-২০২৩) প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা মুমতাজুল করিম। মরহুম বাবা হুজুর চরমোনাইর মরহুম পীর শায়খ ইসহাক রহ. এর জামাতা ছিলেন।

১৯৪২ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার ডুলিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মাওলানা মুমতাজুল কারিম। তিনি এলাকার বিখ্যাত বটগ্রাম হামিদিয়া মাদরাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এরপর ফেনী শর্শদি মাদরাসায় কিছুদিন পড়াশোনা করে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় ভর্তি হন। পরে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসা থেকে সুনাম ও কৃতিত্বের সঙ্গে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন।

দাওরায়ে হাদিস শেষ করে ১৯৬৩ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাকিস্তানে যান। দেশটির বিখ্যাত মাদরাসা জামিয়া আশরাফিয়া লাহোর থেকে তাফসির ও আদব (আরবি সাহিত্য) বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন।

১৯৬৫ সালে বাংলাদেশে ফিরে ময়মনসিংহের কাতলাসেন কাদেরিয়া কামিল মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন। একই বছরে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে যোগ দেন এবং মুসলিম শরিফের দরস দেওয়া শুরু করেন। পরবর্তীতে ঢাকা আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসায় সাত বছর মুহাদ্দিস হিসেবে খেদমত করে চট্টগ্রামের পটিয়া মাদরাসায় মুহাদ্দিস হিসেবে নিয়োগ পান। পটিয়া মাদরাসায় টানা সাত বছর সুনামের সাথে হাদিসের দরস দেন তিনি। এ সময় পটিয়া থেকে প্রকাশিত ‘মাসিক আত তাওহীদ’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জামিয়া হোসাইনিয়ার প্রতিষ্ঠাতা তিনি।

১৯৮৪ সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে নিয়োগ পান। হাটহাজারী মাদরাসায় অত্যন্ত সুনাম-সুখ্যাতির সাথে হাদিসের দরস দেন। হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যাপনাকালে শিক্ষক হিসেবে সকলের মাঝে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের প্রতি তার অপরিসীম দরদ ও ভালোবাসার কারণে ছাত্ররা তাকে ‘বাবা হুজুর’ বলে সম্বোধন করতেন।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ