বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪ ।। ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১ জিলকদ ১৪৪৫


বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায়ের নিয়ম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

পৃথিবীতে বৃষ্টি না হলে প্রখর রোদ্রের তাপ আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে মানুষ। অনাবৃষ্টির কারণে জমির ফসলও পুড়ে যায়। সে অনুকূল কঠিন পরিস্থিতিতে কী করবে মানুষ? শিখিয়ে দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবি মুহাম্মদ রাসুল সা.। তিনি এ গরমের প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টি প্রার্থনা করতে নামাজ আদায় করতে বলেছেন। আর সে নামাজের নামই সালাতুল ইস্তিসকা।

ইস্তিসকা এর অর্থ পানি প্রার্থনা করা। অনাবৃষ্টিতে খুব বেশি কষ্ট হলে সব মুসল্লিদের নিয়ে একত্রে খোলা মাঠে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা হয়। আর এ প্রার্থনা করাকেই ইস্তিসকার নামাজ বলে।

আলেমদের মতে, এ নামাজ মাঠে গিয়ে আদায় করার আগে পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণপূর্বক একাধারে তিন দিন রোজা রাখবে। তারপর সংশ্লিষ্ট ওই এলাকার ইমাম বা খতিব সাহেব মুসল্লিদের নিয়ে বসবেন, নসিহত করবেন, উপদেশ দেবেন। তিন দিনের রোজা শেষে চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ দিনে মাঠে গিয়ে নামাজ আদায় করবেন। মাঠে যাওয়ার আগে এবং পরে সবাই তওবা করবেন। তওবা করলে বৃষ্টি বর্ষণের খুবই সম্ভাবনা থাকে।

ইস্তিসকার নামাজের বর্ণনা

এক. ইস্তিসকার নামাজ দুই রাকাত। আযান ইকামতবিহীন প্রকাশ্য কিরাআতে উক্ত নামাজ আদায় করতে হয়।

দুই. মুসল্লি প্রথম রাকাতে তাকবীরে তাহরিমার পর সাতবার তাকবীর দেবে। আর দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচ বার তাকবীর দেবে।

তিন. প্রত্যেক তাকবীরের সময় হাত উঠাবে এবং তাকবীরগুলোর মাঝে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দরূদ পড়বে।

চার. নামাজের পর ইমাম খুতবা দিবেন। খুতবায় বেশী বেশী ইস্তেগফার ও কুরআন তিলাওয়াত করবেন। অতঃপর দু হাত উঠিয়ে মিনতির সঙ্গে  দোয়া করবেন এবং হাদীসে বর্ণিত দোয়াগুলো বেশী পড়বেন।

ইস্তিসকার নামাজের কিছু আহকাম

এক. ইস্তিসকার নামাজের পূর্বে ওয়াজ নসীহত করা, মানুষের হৃদয় গলে এমন কথা বার্তা বলা, যেমন গুনাহ থেকে তাওবা করার গুরুত্ব তুলে ধরা। জুলুম অন্যায়ভাবে হাতিয়ে নেয়া সম্পদ তার হকদারের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা; কেননা মানুষের পাপ-গুনাহের কারণেই বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেয়া হয়।

আর তাওবা ইস্তিগফার ও তাকওয়া অর্জন, দোয়া কবুল হওয়া এবং খায়ের ও বরকত লাভের কারণ। অনুরূপভাবে মানুষদের  এ উপলক্ষে দান খয়রাতের ব্যাপারেও উৎসাহ দেয়া; কেননা দান খয়রাত আল্লাহর রহমত আকৃষ্ট করার কারণ।

দুই. ইস্তিসকার নামাজের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট দিন ঠিক করা, যাতে মানুষ ওই দিনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষায় থাকে।

ইস্তিসকার নামাজে খুশু-খুজু, বিনয়- নম্রতার সাথে গমন করা সুন্নত। সাথে সাথে একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই যে বান্দার সকল হাজত-প্রয়োজন পূরণ করেন এ মনোভাবও অন্তরে জাগ্রত রাখা উচিত।

ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইস্তিসকার নামাজের জন্য বের হওয়ার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনাড়ম্বরভাবে, বিনয়-নম্রতা ও আকুতিসহ বের হয়ে নামাজের মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। (আবু দাউদ শরীফ)

তিন. ইস্তিসকার খুতবায় হাত উঠিয়ে বেশি বেশি  দোয়া ও ইস্তিগফার করা।

বৃষ্টিপাত হলে যা করা মুস্তাহাব

বৃষ্টিপাতের শুরুতে বৃষ্টিতে নামা ও ভেজা মুস্তাহাব। হাদীসে এসেছে, আনাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে থাকা অবস্থায় আমাদের বৃষ্টি পেয়ে বসল। তিনি বলেন, অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর কাপড় গুটালেন। তিনি বৃষ্টিতে ভিজলেন। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি এমন করলেন কেন? তিনি বললেন, কেননা এ বৃষ্টি তার রবের পক্ষ থেকে নতুন এসেছে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ