বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ ।। ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫


সীতাকুণ্ডের মর্মান্তিক ট্রাজেডি: শোকে স্তব্ধ আলেম সমাজ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম।। দেশের মানুষ এক ভয়াবহ ট্রাজেডির স্বাক্ষী হয়েছে। মর্মান্তিক এ অগ্নিকাণ্ডে স্বপ্ন হারিয়েছে হাজারো মানুষ। স্বজনহারা চিৎকারে কেঁপে ওঠেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মাটি। বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ক্রমেই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা।

এ ঘটনায় আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চার শতাধিক। তাদের মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট। তাদের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য। এ ঘটনায় শোকে স্তব্ধ দেশের সর্বোস্তরের আলেম সমাজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন তারা।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদিস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী। তিনি বলেন, ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও কার্যকরী প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় এধরণের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। এতে মানুষের জান ও মালের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হচ্ছে। আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহতদের পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা মনসুরুল হাসান রায়পুরী নিহতদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের সুচিকিৎসা ও দ্রুত সুস্থতার জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়ার আহ্বান জানান।

আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেন, দগ্ধ রোগীদের জরুরি রক্ত ও অন্যান্য সহায়তা প্রয়োজন। যাদের সাধ্য আছে দয়া করে চট্রগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। মানবসেবার এরচেয়ে বড় সুযোগ আর কী হতে পারে? অসুস্থদের আল্লাহ সুস্থ করে দিন। মৃতদের শাহাদাতের মর্যাদা ও পরিবারকে সান্ত্বনা দান করুন।

লেখক, গবেষক, সাংবাদিক মুফতি এনায়েতুল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রাজেডির ছবি শেয়ার করে লিখেন, ওগো মাবুদ! আমরা অসহায়। আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমাদের প্রতি সহায় হও, দয়া করো, ক্ষমা করো।

আওয়ার ইসলামের সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ। মানবতার কল্যাণে সবার এগিয়ে আসা উচিত। যে যেভাবে পারি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন।

ওয়ায়েজ মাওলানা রাফে বিন মুনির লিখেন, হারানোর ব্যাথা, যে হারিয়েছে সে ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। কি মর্মান্তিক দৃশ্য আহ! হাত হারিয়ে, পা হারিয়ে, ভুড়ি হাতে নিয়ে এবং দগ্ধ হয়ে বের হয়ে আসার দৃশ্য ঘুম হারাম করে দিয়েছে। আহতদের আল্লাহ শিফা দান করুন, যারা মারা গিয়েছেন আল্লাহ তাদের শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন। সকল পরিবারকে আল্লাহ সবরে জামীল অবলম্বন করার তাউফীক দান করুন। আমীন!

মারকাযুত তাওকয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মুহতামিম বিশিষ্ট বক্তা, মাওলানা হাবিবুর রহমান মিছবাহ চট্টগ্রাম ট্রাজেডি নিয়ে লিখেন, হাজার সমালোচনার মাঝেও কিছু মানুষ এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়ায়, কিন্তু মানুষ বাঁচাতে গিয়ে নিজেই যখন অঙ্গ হারিয়ে নিরুপায় হয়ে পড়ে থাকে, তখন কর্তব্যরত ব্যক্তিটির মনের অবস্থা কেমন হয় তা এই জানবায পুলিশ ভাইকে দেখলে বোঝা যায়।

কলামিস্ট ও স্যোসালিস্ট মাওলানা রুহুল আমিন সাদী বলেন, খুব ভালো করেই জানি, যাদের সীমাহীন অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে এইসব দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটে, তারা অনেক পাওয়ারফুল মানুষ, তাদের বিচার হয়না। সীতাকুণ্ডের ঘটনারও বিচার হবেনা। তদন্ত কমিটি কিছুদিন পর শীতনিদ্রায় চলে যাবে। এটাই এখানকার নিয়ম।

তাই বিচার দিয়ে রাখলাম আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে, যারা এতগুলো প্রাণহানির জন্য দায়ী, যারা এতগুলো ফ্যামিলিকে বিপদে ফেললো, আল্লাহ তুমি তাদের বিচার করো। আমরা এইসব জালিমদের পরিণতি দুনিয়াতে দেখতে চাই মাবুদ।

ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বেদনা জনক। এ ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পাশাপাশি যাদের উদাসীনতা ও গাফেলতির কারণে এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।

গুলিস্তান পীর ইয়ামানী জামে মসজিদ খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী বলেন, আয় আল্লাহ, তুমি রহম করো,করম করো,দয়া করো। আমরা অসহায়।আমরা দুর্বল।আমরা নিঃস্ব। তুমি ছাড়া আর কেউ নাই।

বিশিষ্ট সমাজসেবক মাওলানা গাজী ইয়াকুব বলেন, আল্লাহ চট্রলার সীতাকুণ্ডে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড থামিয়ে সকলকে রহমতের চাদরে ঢেকে দাও।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ