শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
কচুয়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও যুব মজলিসের নতুন কমিটি ঘোষণা কেবল নেতা পরিবর্তন করতে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রক্ত দেয় নাই : শায়েখে চরমোনাই জুলাই চেতনার সাথে গাদ্দারি ইতিহাস ক্ষমা করবে না : নেজামে ইসলাম পার্টি  চাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্যানেল ঘোষণা হক্কানী আলেমদের পরামর্শে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জাতির জন্য কল্যাণকর: জমিয়ত আলোচনার মধ্যে কর্মসূচি গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়: মির্জা ফখরুল শনিবার ঢাকায় কচুয়ার উলামায়ে কেরামের মতবিনিময় সভা কুমিল্লার নূর মসজিদ মাদরাসায় একাধিক শিক্ষক নিয়োগ পিআর পদ্ধতি জনতা না চাইলে আমরাও আর দাবী করবো না: শায়েখে চরমোনাই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে জাতীয় বিপর্যয় অনিবার্য: মহাসচিব 

কাবা ঘরকে স্ট্যাচু বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে জিয়াউল হাসান: বিশিষ্ট ৩ আলেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সুফিয়ান ফারাবী।।
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট>

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে সরকার ও ইসলামপন্থীরা মুখোমুখি অবস্থানে।ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ করার দাবিতে ইসলামপন্থীরা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।

অপরদিকে সরকারদলীয় কয়েকজন উচ্চপদস্থ নেতা বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য নির্মাণ কাজে যারা বাধা দিতে চাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা পরিষ্কার করে বলতে চাচ্ছে, ভাস্কর্য ও মূর্তি এক জিনিস নয়। সৌদি আরবসহ বিশ্বের ইসলামিক কিছু রাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে ভাস্কর্যের বৈধতা প্রমাণের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

এই পরিস্থিতিতে দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে বিষয়টি তোলা হয়। সেখানে মাওলানা জিয়াউল হাসান নামের এক ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে মুসলমানদের কেবলা তথা আল্লাহর ঘর কাবা ও হাজারে আসওয়াদকে ভাস্কর্য বলে মন্তব্য করেছেন।

তার এই বক্তব্যকে দেশের আলেমসমাজ বিভ্রান্তিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়েছেন। তার এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা হয়েছে দেশের প্রবীণ আলেম ও শীর্ষ মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ভাস্কর্য শব্দটি বাংলা। যার আরবি অনুবাদ تمثال। অর্থাৎ দৃশ্যমান কোনো বস্তু বা প্রাণের অনুরূপ তৈরি করাকে ভাস্কর্য বলা হয়। ‌এবং সেই অনুরূপ বস্তুকে যদি উপাসনা করা হয়, তখন সেটাকে বলে দেব-দেবী অথবা মূর্তি।

কাবা শরীফ ও হাজরে আসওয়াদ দুটি বস্তু প্রকৃত জিনিস। কোন জিনিসের অনুরূপ নয়। কাবাঘর সর্বপ্রথম নির্মাণ করেন ফেরেশতারা। ক্রমান্বয়ে আদম আ. ও হযরত ইব্রাহিম আ.। সুতরাং এটি মূল বস্তু; যা কোন জিনিসের অনুরূপ বা সাদৃশ্য নয়।

অন্যদিকে হাজরে আসওয়াদ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জান্নাত থেকে পাঠিয়েছেন। এ পাথরটি অন্য কোন পাথরের সাদৃশ্য বস্তু নয়।

সুতরাং যে ব্যক্তি এমন মন্তব্য করেছে সে নিছক গণ্ডমূর্খ; যদি অজ্ঞাতসারে করে থাকে। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে জেনে বুঝে সে এধরনের মন্তব্য করে, তাহলে তার ঈমান নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেন, টিভি টকশোতে কাবা শরিফকে স্ট্যাচু (মূর্তি) বলে পরিস্কারভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন জিয়াউল হাসান। একটি ঘরকে মূর্তি বা ভাস্কর্য বলে একই সঙ্গে তিনি মূর্খতার পরিচয়ও দিয়েছেন। কারণ মূর্তি বা ভাস্কর্যের কোনো সংজ্ঞাতেই কাবা পড়ে না।

ইমাম আজম আবু হানিফা একাডেমির প্রধান মুফতি আব্দুল কুদ্দুস নোমান বলেন, কাবা ঘরকে পৃথিবীর প্রাচীন ঘর হিসেবে পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। মক্কা বিজয়ের পর রাসূল সা. কাবা ঘরের কয়েক শতাধিক মূর্তি অপসারণ করেছিলেন। হাদিসে এ বিষয়ে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে।

ইতিহাস বলে, কাবাঘর এ পর্যন্ত ১০ বার সংস্কার করা হয়েছিল।

সর্বশেষ যখন বাদশা হারুনুর রশিদ একে সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন, তখন ইমাম মালিক রহ. তাকে বাধা প্রদান করে বলেন, আপনি যদি কাবা শরিফের সংস্কারে হাত দেন তাহলে বিষয়টি খেল-তামাশার বস্তুতে পরিণত হবে। ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেওয়ার জন্য দেখা যাবে প্রত্যেক জামানার বাদশাহ তা পুনঃসংস্কার করবেন। খোদা না করুক, কিয়ামত পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকবে। সুতরাং কাবা শরীফের পুননির্মাণ দরকার নেই।

পবিত্র কোরআনে বাইতুল্লাহকে بيت العتيق বলার মাধ্যমে কাবা ঘরকে সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। কাবাঘর যে স্ট্যাচু নয়; কোরআনের এ দুটি শব্দই তা প্রমাণ করতে যথেষ্ট।

কোরআনের আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে কাবা শরিফ নির্মিত ঘর। কোনভাবেই একে ভাস্কর্য অথবা স্ট্যাচু বলে অবহিত করা যাবে না।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ