আওয়ার ইসলাম: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট নামে জোট গঠন করে। বিএনপি ও জোটের অন্যান্য শরিক দলের মধ্যে চলছে আসন ভাগাভাগি।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি ও জোটের অন্য শরিকদের মধ্যে দ্বিমুখী সংকট ও দূরত্ব তৈরি হওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় আর মাত্র দুদিন থাকলেও শরিকরা এখনো জানতে পারছেন না, কে কোথায় নির্বাচন করবেন?
ঐক্যফ্রন্টে বিএনপির তিন শরিক গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের দাবি দুশ’র ওপরে হলে বিএনপি আসন ছাড়ছে মাত্র ২০টি। সে ক্ষেত্রে শরিক নেতাদের পছন্দসই আসনে মনোনয়ন দেয়া হবে কিনা এ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে।
তবে এ ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বক্তব্য হলো, জোট ও বিএনপির মধ্যে কোনো সংকট তৈরি হয়নি। জোট হলে তো আসন ভাগ করতেই হয়। আলোচনা কিছুটা শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, এই কাজটি অনেক কঠিন। পিঠা ভাগ করতে গেলেও টানাটানি হতে পারে। কেউ পাবে, কেউ পাবে না। তবে যে পাবে না, সে তার পাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে।
বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের ২০টির মতো আসন ছাড়তে চায় বলেই নেতাদের সূত্রে জানা গেছে। আর এ ক্ষেত্রে নেতাদের পছন্দের আসনে ছাড় দেওয়া হবে, এমনও নয়। তবে ঐক্যফ্রন্টের তিন শরিক গণফোরাম, জেএসডি এবং নাগরিক ঐক্যের চাওয়া আকাশচুম্বী। তারা তিনজন মিলে চেয়েছে ২১৫টি, যদিও গণফোরাম একাই আশা করছে ১১৩টি আসন পাওয়ার।
তবে বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের দাবি নিয়ে বিরক্ত বলেই জানা যাচ্ছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজ উদ্দিনের মধ্যে কথোপকথনের একটি অডিও প্রকাশিত হয়েছে।সেখানে মোশাররফের কথায় উঠে আসে তাদের বিরক্তি।
দুটি জোটের সঙ্গে গত কয়েক দিন ধরেই বিএনপির আসন বণ্টন নিয়ে দর-কষাকষি চলছে। জোটের প্রার্থী ঠিক করার শেষ মুহূর্তে এসে চূড়ান্ত দর-কষাকষি চলছে জোটের শরিকদের মধ্যে।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিএনপি ২৪০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শরিকদের সর্বোচ্চ ৬০ আসন দেবে। এর মধ্যে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো পাচ্ছে ৪০-৪২ আসন। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো পাচ্ছে ১৮-২০ আসন।
আসন বণ্টনের বিষয়টি কোন পর্যায়ে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জোট ও বিএনপির মধ্যে সংকট হয়নি। জোট হলে তো আসন ভাগ করতেই হয়। আলোচনা কিছুটা শুরু হয়েছে।’
‘এই কাজটি অনেক কঠিন। পিঠা ভাগ করতে গেলেও টানাটানি হতে পারে। কেউ পাবে, কেউ পাবে না। তবে যে পাবে না, সে তার পাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরবে।’
এ ব্যাপারে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘আমরা কয়টা পাব সেভাবে আমরা বার্গেনিং করি নাই। আমরা চাই সৎ এবং যোগ্য লোককে মনোনয়ন দেওয়া হোক। যে দলেরই হোক, যোগ্য লোককে আমরা মনোনয়ন দেব।’
আসন ভাগাভাগির বিষয়টি সুরাহা করতে গত রবিবার রাজধানীর মতিঝিলে কামাল হোসেনের চেম্বারে বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা। একই রাতে আরেক দফা বৈঠক হয় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে। এ বৈঠকের পরই আসন বন্টন নিয়ে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়।
এসএস