|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||
রঙের জগৎ যে এখনও পুরোপুরি আবিষ্কৃত হয়নি, তা প্রমাণ করল যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণা দল। আমাদের চোখ সাধারণত দৃশ্যমান আলোর একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে থাকা রঙই দেখতে পায়—যাকে বলে ভিজিবল স্পেকট্রাম। তবে এবার বিজ্ঞানীরা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে সীমিত এই পরিধি অতিক্রম করে নতুন এক ধরনের রঙ দেখা সম্ভব হয়েছে। এই নতুন রঙের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ওলো’, আর পুরো পদ্ধতিটিই নাম পেয়েছে ‘ওজ’।
এ নামের উৎসও বেশ চমকপ্রদ। বিখ্যাত সাহিত্যিক লিম্যান ফ্র্যাঙ্ক ব্যোম এর লেখা ‘দ্য উইজার্ড অব ওজ’ গল্পে ছিলো এক কাল্পনিক শহর—ওজের শহর। সে শহরের মানুষ সবুজ পান্নার তৈরি এক চশমা পরে সবকিছু দেখে। ফলে পুরো শহরই তাদের চোখে সবুজ রঙের মনে হয়। বাস্তবেও বিজ্ঞানীরা এমন এক 'চশমার' মতো প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যা দিয়ে দেখা যায় আমাদের পরিচিত রঙের বাইরের কিছু—অদেখা এক রঙ!
গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে অত্যন্ত জটিল চাক্ষুষ পরীক্ষার মাধ্যমে। প্রথম ধাপে প্রায় শতাধিক মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হলেও, শেষ পর্যন্ত মাত্র ৫ জন মানুষ এই রঙ দেখতে সক্ষম হন। এটিই ‘ওলো’ নামক রঙের প্রথম দর্শন। গবেষকরা বলছেন, এটি এমন এক রঙ—যা আগে কখনো কোনো মানুষের চোখে ধরা পড়েনি। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে মানুষের রঙ চেনার ক্ষমতার একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। এই পদ্ধতি শুধু চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার বিস্তারে নয়, বরং মস্তিষ্কের রঙ প্রক্রিয়াজাত করার উপায় সম্পর্কেও নতুন ধারণা দেবে।
রঙ নিয়ে এতদিন যা জানা ছিল, তার গণ্ডি পেরিয়ে এই আবিষ্কার একটি রঙিন ভবিষ্যতের দিকেই যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে—যেখানে 'অদেখা' রঙও একদিন হয়ে উঠতে পারে 'চেনা' রঙের মতোই পরিচিত।
এসএকে/