বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫ ।। ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১৯ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
‘আরপিও সংশোধনীর সাথে পিআর পদ্ধতি সংযুক্ত হলে নির্বাচনী অরাজকতা দূর হবে’ প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার : প্রধান উপদেষ্টা সমকামী এক্টিভিস্ট কর্তৃক দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে হত্যার হুমকি সত্য বলার কারণে সারজিসের বিরুদ্ধে বিএনপি মামলা করেছে: শায়খে চরমোনাই জুলাই আমাদের শিখিয়েছে কীভাবে ফ্যাসিবাদের কবর দিতে হয় : এ্যানি সমীকরণ এখনো শেষ হয়নি: নাহিদ ইসলাম পৃথিবী এক ক্ষণস্থায়ী সরাইখানা ছাড়া কিছু নয় পিআর পদ্ধতিতে জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে: পীর সাহেব চরমোনাই  জেদের বশবর্তী হয়ে প্রকৃতির ক্ষতি করছে পাথর খেকোরা: আলী হাসান ওসামা ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে সংস্কার ও নতুন সংবিধান বাস্তবায়ন হবে না’

পিআর পদ্ধতিতে জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে: পীর সাহেব চরমোনাই 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ তৈরি হবে না; জবাবদিহিমূলক সরকার কায়েম হবে। একটি সুন্দর দেশ গঠন হবে। জবাবদিহিতার অভাবেই ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ হ্রাস পাবে এবং সংলাপের সংস্কৃতি সৃষ্টি হবে। তাছাড়া প্রতিটি ভোটের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হবে । সকল দল-মতের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার তৈরি হবে।

আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট)  বিকাল ৩টায় ঐতিহাসিক নোমানী ময়দানে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে, ইসলাম দেশ ও মানবতাবিরোধী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাগুরা জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) ও মাগুরা জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মুফতী মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফেজ মনিরুজ্জামান এর সঞ্চালনায় আয়োজিত গণসমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, ১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনো দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে একই সাথে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনায়, বক্তব্যে ও মন্তব্যে শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। কারণ কোন অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে কোন সুযোগ করে দেয়া যাবে না।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ৫ আগষ্টের পরে দেশ গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন বলে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। সেই সংস্কার হতে হবে রাষ্ট্রের কাঠামোতে, আইনে এবং রাজনৈতিক দলের চরিত্র ও সংস্কৃতিতে। রাষ্ট্রের কাঠামো ও আইনী সংস্কারের কাজ কিছুটা অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক চরিত্র ও সংস্কৃতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসে নাই। ৫ আগষ্টের পরে রাজনৈতিক হানাহানিতে নিহত-আহত মানুষের সংখ্যা শুনে আঁতকে উঠতে হয়। চাঁদাবাজী কোন অর্থেই কমে নাই। সন্ত্রাসও কমে নাই। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিডফোর্ট হাসপাতালের সামনে যে বর্বরতায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে জনতা ফুঁসে উঠেছে স্বাভাবিক কারণেই।

মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, জনতার সেই প্রতিবাদকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বর্বর সেই হত্যাকাণ্ডকে আড়াল করে ফেলা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে মানুষ এই ধরণের রাজনীতি দেখতে চায় না। এই ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতদের একটা বড় অংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিএনপি কর্তৃক তাদের বহিস্কারের মাধ্যমে এটা প্রমানিতও বটে। তাই বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলবো, কর্মীদের অপরাধের দায়ভার দল হিসেবে আপনাদের বহন করতেই হবে। চাঁদাবাজরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা দেখিয়েই জনতার কাছ থেকে চাঁদা দাবী করে। তাই জনতার ক্ষোভ বিএনপির প্রতি হবে এটা স্বাভাবিক। জনতার এই প্রতিবাদকে প্রতিপক্ষ না বানিয়ে দলের ভেতরে থাকা অপরাধীদের চিহ্নিত করুন। অপরাধ ঘটার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাগুরা জেলা সহ-সভাপতি ও মাগুরা-০১ আসনে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা নাজিরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মাওলানা মশিউর রহমান সহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠন সমূহের জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

সভাপতির বক্তব্যে মুফতি মোস্তফা কামাল বলেন, চাঁদাবাজী ও রাজনৈতিক দস্যুতা জুলাই বিপ্লবের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আমাদের সন্তানরা বিপ্লব করেছিল। সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতির আমূল সংস্কার হবে। পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে। প্রতিহিংসা দূর হবে এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু ক্ষমতা লোভী কিছু মানুষ ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করায় সুস্থ রাজনীতির প্রত্যাশা আজ ফিকে হয়ে গেছে। সোহাগ হত্যা তার একটি দৃষ্টান্ত। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক ইস্যুতে আমরা কোনভাবেই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছি না। 

তিনি বলেন, জুলাই’২৪ এর বিপ্লব ছিল নতুন বাংলাদেশ আবিস্কার। বিপ্লবীদের শ্লোগান ছিল উই ওয়ান্ট জাস্টিজ। ইমাম-খতীবদের জুমার খুতবা ছিল ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। আমরা আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এক বাক্সে ভোটের মাধ্যমে সেই কাঙ্খিত ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ