শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদ ও নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে সাভারে হেফাজতের বিক্ষোভ আমরা একজোট হয়ে ভারতকে জবাব দেব: মাওলানা ফজলুর রহমান পটিয়ার সাবেক সিনিয়র উস্তাদ মাওলানা আব্দুল মান্নান দানিশের ইন্তেকাল নারী সংস্কার কমিশনের কিছু ধারা কোরআন-সুন্নাহর খেলাপ: জামায়াত আমির  ‘নারী সংস্কার কমিশনের উদ্দেশ্য ধর্মীয় ও পারিবারিক কাঠামো ধ্বংস করা’ ঐতিহাসিক দারোগা বাগানের ৩ একর জায়গা উদ্ধার করলেন বন বিভাগ  পেহেলগাম হত্যার তীব্র নিন্দা দারুল উলুম দেওবন্দের অবশেষে ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করল পাকিস্তান হজযাত্রায় গ্রামীণফোন গ্রাহকদের জন্য সুখবর! পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ভয়াবহ বোমা হামলা

নারী সংস্কার কমিশনের বিরুদ্ধে জোরালো হচ্ছে ইসলামপন্থীদের প্রতিবাদ


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
সংগৃহীত

গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন ইসলামবিরোধী ধারা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ইসলামি দলগুলো, জনপ্রিয় ইসলামি ব্যক্তিত্ব, বিশিষ্ট আলেম ও স্কলাররা একযোগে এই সংস্কার সুপারিশের সমালোচনা করেছেন। তারা শুধু এই সুপারিশ বাতিলই নয়, এই কমিশনও বাতিলের দাবি করেছেন।
 
আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ পাঁচ দাবিতে আগামী ৩ মে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ ডেকেছে। এর মধ্যে এই সংস্কার কমিশন বিলুপ্ত ঘোষণা না করলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। 

ইসলামি ধারার প্রায় সব দলই নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশের কড়া সমালোচনা করেছে। যারা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে এতদিন জোরালো ভূমিকা রেখে আসছেন তারাও এই ইস্যুতে সরকারের কড়া সমালোচনা করছেন। যেকোনো মূল্যে এই সুপারিশ ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছেন তারা। 

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান রোববার (২০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বার্তায়  বলেন, দেশে যখন নৈতিকতার অভাবে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক এবং পারিবারিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে সামাজিক শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে উক্ত সুপারিশমালায় এমন কিছু গর্হিত বিষয় নিয়ে আসা হয়েছে তা সমাজকে অনিশ্চয়তা ও চরম অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবে। কতিপয় সুপারিশ কোরআন এবং হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পাশাপাশি সব ধর্মের মূল্যবোধকে তছনছ করে দেবে বলেও বার্তায় উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোতে ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক পারিবারিক বিধানকে চরমভাবে অবজ্ঞা ও অস্বীকার করা হয়েছে। সুপারিশে থাকা ‘অভিন্ন পারিবারিক আইন’–এর মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করার নামে ইসলামের বিধানকে বাতিল করে পশ্চিমা সমাজব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা বলে বিবৃতিতে বলা হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের প্রধান মিসেস নুরুস সাবিহা, সহ প্রধান কোহিনূর বেগম ও সমন্বয়কারী হাফেজা বুশরা রোববার (২০ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, নারী সংস্কার কমিশন শনিবার (১৯ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার কাছে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তার প্রস্তাবনা, ভাষা ও যুক্তি আমাদের হতাশ করেছে। পশ্চিমের ধর্মবিমুখ, পরিবার বিচ্ছিন্ন ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবাদের বিকৃত বিকাশের পটভূমিতে বিকশিত নারীবাদী চিন্তার পাটাতনে ও ভাষায় নারী বিষয়ক সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে; যা এদেশের নারীর হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস, চরিত্র, মেজাজ ও সংস্কৃতির সাথে সম্পূর্ণরুপে সাংঘর্ষিক।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সাম্প্রতিক প্রস্তাবনাকে ইসলামবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে এ কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ১৯ এপ্রিল কমিশনের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ১৫টি মূল বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত ৪৩৩টি প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে কিছু সুপারিশ সরাসরি ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, প্রস্তাবিত সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্রমিক আইনে যৌনকর্মীদেরকে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ইসলামের পারিবারিক উত্তরাধিকার আইনকে নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের আহ্বান, যা মুসলিম সমাজের ধর্মীয় মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করে।

বিশিষ্ট দাঈ ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে লিখেন- নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন কিছু প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে, যা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও নৈতিকতার সঙ্গেও বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। প্রস্তাবনায় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। প্রতিবেদনের পরতে পরতে আঁকা হয়েছে পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার এক গভীর নীলনকশা।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ