মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরান যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকে বসেছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রিয়াদে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির দুই সপ্তাহ পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এবং মধ্যপ্রাচ্যের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি সৌদি নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসাও করেন।
বৈঠকে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আশা প্রকাশ করেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ফলে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ফিরবে। তিনি বলেন, সৌদি আরব কূটনৈতিক উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সহায়তা করতে প্রস্তুত—বিশেষত যেসব রাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক উত্তপ্ত।
বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি যুবরাজের এই মন্তব্য মূলত ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে।
উল্লেখ্য, যখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র ওমানে পরমাণু ইস্যুতে সংলাপে বসে, তখন গত ১২ জুন ইসরায়েল তেহরান ও একাধিক পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রও সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের ফার্দো, নানতাজ ও ইসফাহানে হামলা চালায়। একাদশতম দিনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।
যদিও ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি সংঘাত বন্ধ রয়েছে, তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সংলাপ কার্যত স্থগিত।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠীকে ইরানের সহায়তা ঘিরে সৌদি-ইরান সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। একপর্যায়ে ২০১৬ সালে রিয়াদ তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
তবে চীনের মধ্যস্থতায় ২০২৩ সালে দুই দেশ আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে।
এমএইচ/