গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেছেন, গাজায় সক্রিয় স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর অবশ্যই তাদের অস্ত্রসমূহ ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে হবে এবং এই অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের হাতেই থাকা উচিত।
রোববার (১৪ জুলাই) জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এ তথ্য জানিয়েছে।
আব্বাস আরও বলেন, স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোকে বৈধ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। তার মতে, যুদ্ধ-পরবর্তী বাস্তবতায় গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার করবে এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ সেখানে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবে। এই প্রক্রিয়ায় আরব দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও সমর্থন রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলো মনে করে, ইসরায়েলি আগ্রাসন ও রাজনৈতিক দমন-পীড়নের মুখে অস্ত্রধারিতাই তাদের আত্মরক্ষার একমাত্র উপায়। তারা মনে করেন, একটি মুক্ত ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্র ত্যাগ করা অবাস্তব এবং আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।
আব্বাসের এ বক্তব্য সামনে আসতেই বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, দুর্নীতি, প্রশাসনিক অদক্ষতা এবং ইসরায়েল ঘেঁষা মনোভাবের কারণে মাহমুদ আব্বাস ও তার প্রশাসনের প্রতি সাধারণ ফিলিস্তিনিদের আস্থা কমে গেছে।
এর আগে এ বছরের শুরুতে লেবানন সফরের সময় আব্বাস ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরগুলোতে অস্ত্র ত্যাগ ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি খসড়া সমঝোতায় সম্মত হন। তবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের অনেকে বিষয়টিকে “প্রতিরোধের বিরুদ্ধে চক্রান্ত” হিসেবে বিবেচনা করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, মাহমুদ আব্বাসের এই পরিকল্পনা গাজার পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি উপায় হতে পারে, তবে তা স্বাধীনতাকামীদের অন্তর্ভুক্তি ও সম্মতির ভিত্তিতে না হলে আরও সংঘাত ও বিভক্তি তৈরি করবে।
এসএকে/