দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর আবার দেশে চালু হচ্ছে ইবতেদায়ি বৃত্তি পরীক্ষা। ২০২৫ সাল থেকে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং নতুন নীতিমালা অনুযায়ী দেশের প্রায় ১২ হাজার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বৃত্তি পাবে।
উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে ‘সাধারণ’ এবং ‘ট্যালেন্টপুল’ গ্রেডে দুই ধরনের বৃত্তি দেওয়া হবে। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পরবর্তী তিন বছর প্রতি মাসে ৪৫০ ও ৬০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাবেন।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, বৃত্তি পরীক্ষায় মোট ছয়টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে—কুরআন মাজিদ, আরবি (১ম ও ২য় পত্র), বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান। প্রতিটি বিষয়ে ন্যূনতম ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে বৃত্তি পাওয়ার জন্য। বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। গণিত ও বিজ্ঞানে পৃথকভাবে ১০০ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় নির্ধারিত হবে পর্যায়ক্রমে, এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘ইবতেদায়ি ৫ম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা ২০২৫’ শিরোনামে প্রকাশিত এ পরিপত্রে বৃত্তি পরীক্ষার পরিধি, বিষয়, নম্বর বণ্টন, পরীক্ষা পদ্ধতি ও বৃত্তি দেওয়ার নিয়মাবলি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা পর্যায়ে সাধারণ বৃত্তি পাবে ৭ জন ছেলে ও ৭ জন মেয়ে, মাসে ৪৫০ টাকা করে; ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পাবে ৩ জন ছেলে ও ৩ জন মেয়ে, মাসে ৬০০ টাকা করে। সিটি কর্পোরেশনের ৫০১টি ওয়ার্ডে সাধারণ বৃত্তি পাবে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে, ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পাবে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে। ফলে দেশের সব উপজেলায় মোট ৯ হাজার ৯০০ এবং সিটি কর্পোরেশনের ৫০১ ওয়ার্ডে ২ হাজার ৮ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি সুবিধা পাবেন।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা মো. নূরুল হক বলেন, ইবতেদায়ি বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার আগ্রহ এবং প্রতিযোগিতার মনোভাব ফিরিয়ে আনবে। এটি শুধু মেধাবী শিক্ষার্থী চিহ্নিত করার জন্য নয়, বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও তাদের প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ পাবে।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা মনে করছেন, বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শৃঙ্খলা, অধ্যবসায়, আত্মবিশ্বাস ও সৃজনশীল চিন্তাভাবনা বিকাশ করবে। বৃত্তি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। এটি শিক্ষার মান উন্নয়নে, শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্কের গভীরতায় এবং মাদ্রাসা শিক্ষার মর্যাদা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এনএইচ/