মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সাপের কামড়ে প্রাণ গেল ইমামের চট্টগ্রামে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময় সভা জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা

‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় নারী হিসেবে আমরা লজ্জিত’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সৈয়ব আহমেদ সিয়াম 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে আজ বুধবার (২১ মে) সংবাদ সম্মেলন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, “নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা নারী হিসেবে আমাদেরকে লজ্জিত করেছে। এই কমিশন নারীকে হেয় করে পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চায়।”

সংবাদ সম্মেলনে দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামসুন্নাহার মিতুল বলেন, “নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখা উচিত, যেখানে নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রকৃত ইনসাফ বিদ্যমান থাকবে। কিন্তু, উত্তরাধিকার আইনে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিকতা, যৌনকর্মীদের শ্রমিক স্বীকৃতি প্রদান, ম্যারিটাল রেইপ আইন, ট্রান্সজেন্ডার নারীদের স্বীকৃতির কৌশল অবলম্বন প্রভৃতি প্রস্তাবনা বাঙালি মুসলিমদের মূল্যবোধ ও চিন্তার সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। তাদের এই প্রস্তাবিত মডেল কী আমাদের দেশের ট্রাডিশন, কালচার, ফেইথ, সোশ্যাল ভ্যালু, মোরালিটিটির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? এক্ষেত্রে তাদের কোনো ডেটা বা রিসার্চ ফাইন্ডিংস আছে কী?”

তিনি আরো বলেন, “পতিতাবৃত্তির স্বীকৃতি আমাদের সমাজ ও পরিবার ব্যবস্থাকে ভঙ্গুর করে তুলবে। আপনি আপনার মা বা মেয়ের পতিতাবৃত্তিতে যুক্ত হওয়া সম্মানজনক মনে না করলে কেন এর স্বীকৃতি চাচ্ছেন? পতিতাদের বড় অংশই অনিচ্ছায় বিক্রি হয়ে এই পেশায় আসে। এদের মধ্যে একটা বড় অংশ আবার অপ্রাপ্তবয়স্ক। বাংলাদেশে যৌনকর্মীর চেয়ে মাদকাসক্তের সংখ্যা বেশি। মাদকাসক্তদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হলে যৌনকর্মীদের পুনর্বাসন কেন সম্ভব নয়?”

ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল আদন নুসরাত বলেন, “নারী সংস্কার কমিশন উত্তরাধিকার আইনে ধর্মীয় আইনের পাশাপাশি আলাদা সিভিল ল চাচ্ছেন। একই পরিবারের দুই জন সন্তানের মাঝে একজন সিভিল ল আর আরেক জন ইসলামী আইনে সম্পদের ভাগ চাইলে আপনি কীভাবে সমাধান করবেন? যে দেশে প্রচলিত আইনে নারী তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার চাইতে গেলে নেগেটিভলি নেওয়া হয়, প্রপার ইমপ্লিমেন্টেশন নেই সেদেশে এই ধরনের ধ্বংসাত্মক আইন কেন? আমরা বাংলাদেশের নারীরা কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক সম্পদের উত্তরাধিকার চাই। আমাদের জন্য এটাই নিশ্চিত করুন। ইসলামী উত্তরাধিকার আইনের সঠিক প্রয়োগই জরুরী মনে করছি।”

শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম বলেন, “এই নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা আমাদের নারী হিসেবে লজ্জিত করেছে। আপনারা নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য কমিশন গঠন করেছেন নাকী নারীকে হেয় করার জন্য কমিশন গঠন করেছেন তা ঠিক আমার বোধগম্য নয়। ম্যারিটাল রেইপের আইন পারিবারিক ব্যবস্থা ধ্বংসের এক চক্রান্তের নাম। এই আইন নারী-পুরুষের সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য অশনিসংকেত। একদিকে ম্যারিটাল রেইপের আইন করবেন, অন্যদিকে পতিতাবৃত্তির স্বীকৃতি দিবেন - এটা তো সরাসরি পারিবারিক ব্যবস্থা ধ্বংসের রোডম্যাপ। এই সুপরিশমালা বাস্তবায়িত হলে নারীরা বরং আরো বেশি সমস্যার সম্মুখীন হবে।”

সমাজতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নওশিন নাওয়াল ফাতিমা বলেন, “সংস্কার কমিশনে শব্দের লুকোচুরিতে ট্রান্সউইমেনকেও নারী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি মৈত্রী যাত্রার আড়ালে এসব ট্রান্সজেন্ডারকে আমরা সক্রিয় হতে দেখেছি। ট্রান্সজেন্ডারদের স্বীকৃতি নারীর প্রতি চরম অবমাননার শামিল। জুলাইয়ের বাংলাদেশে এমন কিছু বাস্তবায়ন আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ