মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামায়াতের রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ময়মনসিংহে ইসলামি বইমেলা শুরু ১৩ নভেম্বর ভারতের পুনে দুর্গে নামাজ আদায় করা নিয়ে দেশভর তোলপাড় ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের আরও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে: শায়খে চরমোনাই কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত 'বাংলাদেশ' নামের পত্রিকা : স্বাধীনতার ৩৩ বছর আগের এক ঐতিহাসিক দলিল ভারতের সঙ্গে ১০ চুক্তি বাতিল হওয়ার খবরটি ভুল : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নাতির কাছে কায়দা শিখছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর জামায়াত সেক্রেটারি পরওয়ারের বক্তব্য ঔদ্ধত্যপূর্ণ: এনসিপি ইউএস-বাংলার বহরে যুক্ত হলো তৃতীয় এয়ারবাস এ৩৩০ সম্পন্ন হলো আবু ত্বহা ও সাবিকুন নাহারের তালাক

মুসলিম ঐতিহ্যের রাজসাক্ষী ভারতের মালিক ইবনে দিনার মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মহানবী (সা.)-এর সময়কাল থেকে মুসলিম পর্যটক ও বণিকরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নিজ নিজ মিশন নিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছিলেন।

কেউ বের হয়েছিলেন শুধুই দ্বিন প্রচারের মহান ব্রত নিয়ে; আবার কেউ নিজেদের ব্যবসা বা রাষ্ট্রীয় কাজের উদ্দেশ্য নিয়ে সফর করেছেন দূর-দূরান্তে। এসব মনীষীর একজন ছিলেন রাসুল (সা.)-এর সাহাবিদের বিশ্বস্ত সঙ্গী বিখ্যাত তাবেঈন মালেক ইবনে দিনার। তিনি ছিলেন একজন বড় মাপের ফকিহ ও সুফি সাধক।

মালেক ইবনে দিনার (রহ.) ইরাকের কুফা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দুনিয়াবিমুখতা ও আল্লাহভীরুতা তাঁকে দুনিয়াজুড়ে পরিচিত করেছিল। তিনি ভারতবর্ষে এসেছিলেন মানুষকে ইসলামের সুমহান ছায়াতলে আহ্বান করার জন্য। সেই ধারাবাহিকতায় তিনি ভারতের কেরালা রাজ্যের কাসারকাদ জেলায় মুসলিমদের সালাত আদায় ও নানাবিধ দ্বিনি ইলম শিক্ষা দান করার জন্য একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেটিই আজকের দিনে সুপরিচিত ‘মালেক ইবনে দিনার মসজিদ’।

এটি গোট ভারতবর্ষের প্রাচীনতম মসজিদগুলোর অন্যতম। বর্তমানে এটি ভারতের অন্যতম ও কেরালা রাজ্যের সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদ হিসেবে স্বীকৃত।

মসজিদের বয়স এবং মালেক বিন দিনারের মতো একজন মহান ব্যক্তির হাতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ও তারই নামানুসারে এটির নাম দেওয়ায় এটি একটি ঐতিহাসিক পুণ্যভূমি এবং মুসলিমদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়ে উঠেছে। যার আবেগময় চেতনা প্রজন্মান্তরে মুসলিম সমাজে প্রবাহিত হয়ে আসছে।

প্রাচীন এই মসজিদটির ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের কারণে আজকের অবয়বে আসার পরম্পরায় বেশ কয়েকবার সংস্কার ও উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে। বর্তমানে মসজিদটির তিন তলা দুটি ভবন আছে। ভবনগুলো আধুনিক মুসলিম স্থাপত্যের দৃষ্টিনন্দন কারুশৈলী দ্বারা সজ্জিত। দুটি ভবনই স্থাপত্যশৈলীর ভিন্ন ভিন্ন অবয়বে নির্মিত।

প্রশস্ত জানালা, কারুকার্যময় বৃহদাকারের দরজা, সুউচ্চ মিনার আর দুই ভবনের দুটি গম্বুজ মসজিদের সৌন্দর্য বহু গুণ বৃদ্ধি করেছে। একসঙ্গে কয়েক হাজার মুসল্লি এখানে সালাত আদায় করতে পারেন। বাহারি রং আর আরব্য চিত্রশৈলীর চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য মুসলিমদের পাশাপাশি অমুসলিম পর্যটকদেরও টেনে নেয় কেরালার এই পুণ্যভূমিতে।

বর্তমানে কেরালা মুসলিম সম্প্রদায় এই মসজিদটিকে ঘিরেই গড়ে তুলেছেন সেখানে একটি মাদরাসা, একটি এতিমখানা ও কবরস্থান, যা গোটা কেরালার মুসলিমদের একটি ভালোবাসার স্থান।

ভৌগোলিক অবস্থানও মসজিদটির এত বিখ্যাত হয়ে যাওয়ার একটি কারণ। কেননা এর অদূরেই ভারত মহাসাগর, মসজিদের পাশ ঘেঁষে বয়ে গেছে একটি হ্রদ। পাশেই গড়ে উঠেছে সুবিশাল পাম বাগান, যার সবই সাধারণ মানুষের আবেগ আর ভালোবাসার পরিমাণকে বহু গুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছে।

কোনো কোনো ঐতিহাসিক বর্ণনা করেছেন যে দ্বিতীয় খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর শাসনামলে ভারতে ইসলামের আগমন ঘটে। বিভিন্ন বর্ণনায় আছে, মুগিরাহ বিন শুবাহ (রা.)সহ কিছু সাহাবি পারস্য বিজয়ের পর ভারতে হিজরত করেন এবং কিছু রাজা তাদের হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন।

তবে যেটি নিশ্চিত তা হলো যে মুহাম্মদ ইবন কাসিমের নেতৃত্বে তাবেঈন যুগে সিন্ধু ভূমিতে সামরিক বিজয় পৌঁছেছিল, যিনি সিন্ধু বিজয় করেছিলেন। সে সময় যেসব কাফেলা দ্বিন প্রচারের জন্য ভারতে অবস্থান করছিলেন মালিক বিন দিনার (রহ.) তাদের মধ্যেই একজন। আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ