মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
চট্টগ্রামে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময় সভা জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলায় মতিউর রহমান আকন্দ নিন্দা

দেশে বেড়েছে পশু উৎপাদন, কমেছে কোরবানি, কী হবে ভবিষ্যৎ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাঈয়েদা হাবিবা: মুসলিম বিশ্ব গত দুইটা কোরবানির ঈদ উদযাপন করেছে কোভিড মহারারির মধ্যে। এই সময়ে সব কিছুইতেই ছিলো রেস্ট্রিকশন। মানুষ কোরবানির পশু কিনতে হাটে গেলেও তাকে মানতে হয়েছে অনেক নিয়ম-নীতি। টিবিএসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত বছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশু ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি। এর মধ্যে কোরবানি হয়েছে ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি পশু। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে কোরবানি হয়েছে ৯৪ লাখ ৫০ হাজারের বেশি পশু। অথচ কোভিডের আগের বছর ২০১৯ সালে কোরবানি হয়েছে ১ কোটি ৬১ হাজার পশু। এ বছর কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত আছে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি।

এই কোভিড মহামারির কারণে এমন অনেক কিছুই হয়েছে যা মানুষ আগে কখনো কল্পনাই করতে পারতো না। ২০১৯ সালে বিশে^র ২৫ লাখ মানুষ হজ আদায় করেছেন। অথচ ২০২০ হজ আদায় করেছেন মাত্র ১০ হাজার মানুষ। আর ২০২১ সালে হজ আদায় করেছেন ৬০ হাজার মানুষ।

বাংলাদেশে গত দুই বছর কোরবানির সংখ্যা কমেছে। এ বছর কি বাড়বে কোরবানির সংখ্যা?
জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়ার শিক্ষক মুফতি তাওহীদুল ইসলাম বলেন, কোভিডের সময় অনেক কিছুতেই বিঘ্ন ঘটেছে। দীর্ঘ দিন মানুষ ঘরে বন্দি ছিলেন। অনেকেই ঠিকমত বেতনটাও পাননি। যার কারণে অনেক মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এ জন্য অনেকেই কোরবানি দিতে পারেননি। আবার মানুষের মাঝে একটি ভুল ধারণাও আছে যে, ঋণগ্রস্ত হলে আর কোরবানি দিতে হয় না। অথচ তার অনেক সম্পত্তি আছে। তার ওপর কোরবানি ওয়াজিবও ছিলো ছিলো কিন্তু মাসয়ালা না জানার কারণে কোরবানি দেননি। কোরবানি যেহেতু মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভরশীল তাই মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলে দেশ কোরবানির সংখ্যাও আবার বাড়বে।

বিশ্বব্যাংকের সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালে বাংলাদেশে গরিব লোকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। দারিদ্র্য হার সাড়ে ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২২ শতাংশ হয়েছে। যাঁরা দৈনিক ১ দশমিক ৯০ ডলার আয় করতে পারেন না, তাঁদের দরিদ্র হিসেবে ধরে বিশ্বব্যাংক।

ইসলামিক বিধি অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের ভেতরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব হয়। যাদের উপর কোরবানি ওয়াজিব না তারাও কোরবানি করতে চায়। টাঙ্গাইল গোরস্থান জামিয়া ইসলামিয়া দারুসুন্নাহ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্যই কোরবানি করে। সেই সঙ্গে এটা তাদের কাছে একটি উৎসবও। কোভিডের আগে আমি এমন অনেক মানুষকেই দেখেছে যাদের জন্য একটি গরু কোরবানি করা কষ্টকর। তবুও তারা কোরবানি করেছেন। কোভিডের সময় কোরবানির সংখ্যা কমেগেছে এটা সত্য। কিন্তু আমার মনে হয় মানুষ কোরবানি দেওয়া কমায়নি। আগে যারা এককভাবে কোরবানি দিতেন তারা হয়তো এখন সাতজন মিলে একটা গরু কোরবানি দেন। বাংলাদেশে পশু উৎপাদন যেমন বাড়ছে কোরবানির সংখ্যাও বাড়বে। এদেশের প্রত্যেকটা মানুষই ধর্মপ্রান মুসলিম।

অনেক দেশে যদিও কোভিডের চতুর্থ ঢেউ উঁকি দিচ্ছে তবে টিকার নেওয়ার কারণে মানুষ স্বাভাবিকভাবেই চলছে। মানুষ স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারলে অর্থনৈতিক অবস্থা আবার আগের মত ঘুরে দাঁড়াবে। দেশের জিডিপি বাড়বে। মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতাও বাড়বে সেই সঙ্গে বাড়বে ইসলামের বিধান কোরবানি আদায়ও।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ