মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানী
উপমহাদেশে শবে বরাত নিয়ে দুটি দল দুই মেরুতে। একদল অনেক বাড়াবাড়ি করে বিভিন্ন অবৈধ এবং বিদআত কাজ শবে বরাতের সাথে সংযোজন করে থাকে। আরেকদল শবে বরাতকে পরিপূর্ণভাবে অস্বীকার করে যাচ্ছে। এর মাঝামাঝি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত। কোরআন এবং হাদীসের নিয়ম নীতি অনুযায়ী শবে বরাত পালন করে। তারাই হল আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত।
কোরআন ও হাদিসের আলোকে শবে বরাত প্রমাণিত আছে। যারা শবে বরাত অস্বীকার করে তাদের প্রখ্যাত গবেষক নাসিরুদ্দিন আলবানী শবে বরাতের একটি হাদীস প্রসঙ্গে বলেন হাদীসটি সহীহ। সাহাবায়ে কেরামের বিশাল অংশ বিভিন্ন সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। একটি অপরটিকে সুদৃঢ় করে। তারা হলেন মুয়াজ ইবনে জাবাল, আবু সালাবা আল খুশানী, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ,আবু মুসা আশআরী, আবু হুরায়রা, আবুবকর সিদ্দিক, আউফ ইবনে মালেক ও আয়েশা রা. সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহাহ ৩/১৩৫।
তিনি শবে বরাত সম্পর্কিত আরও কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করার পর লিখেছেন, শবে বরাত সম্পর্কে বর্ণিত হাদিস গুলি সমষ্টিগতভাবে নিঃসন্দেহে সহীহ হাদিস। অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। তবে কেউ যদি এমনটা করে ফেলে তাহলে বুঝতে হবে অতি চঞ্চলতা হেতু এবং হাদীসের বিভিন্ন সূত্র অন্বেষণে যথাযথ প্রচেষ্টা সীমিত হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটেছে। প্রাগুক্ত ৩/১৩৮
লা মাযহাবী মতবাদের সর্বজন স্বীকৃত আলেম আল্লামা ইবনে তাইমিয়া শবে বরাত সম্পর্কিত হাদীসগুলো উল্লেখ করে লিখেন , শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কিত হাদীস রাসুলুল্লাহস. ও সাহাবীগণ থেকে বর্ণিত হয়েছে যেগুলো শবে বরাতের ফজিলত ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে। ইকতিযা ৪৮৪
তাদের অপর এক প্রখ্যাত আলেম আল্লামা মোবারকপুরী তিনি লিখেন, জেনে রেখো শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে বেশ কয়েকটি হাদীস এসেছে যা প্রমাণ করে দিয়েছে শরীয়তে শবে বরাতের কোন ভিত্তি নেই এমন ধারণা যারা রাখে সমষ্টিগতভাবে ওই হাদীসগুলো তাদের বিপক্ষে প্রমাণ বহন করে। তোহফাতুল আহওয়াজি ৩/৩৮৪-৩৮৫
আসলে শবে বরাত সম্পর্কে দলিল প্রমাণ কোরআন এবং হাদীসে অসংখ্য-অগণিত। তবে মাত্র কয়েকটা উক্তি উল্লেখ করা হলো। আসলে প্রতিপক্ষের কথাগুলো সবার কাছেই প্রমাণ বহন করে ।তাই আহলে হাদিস মতবাদের তিনজন বিশেষ ব্যক্তির মতামত উপরে উল্লেখ করা হলো।
তবে শবে বরাতের নামে বাড়াবাড়ি ও ইসলাম পরিপন্থী কোনো কাজ যেমন আতশবাজি, হৈ-হুল্লা ইত্যাদি হতে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।
এই রাতে নির্দিষ্ট কোনো আমল বা নির্দিষ্ট সংখ্যায় কোনো কাজকর্ম হাদীসে বর্ণিত নাই।
অতএব এই রাতে বেশি বেশি করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা, ক্ষমা চাওয়া, কুরআন তেলাওয়াত করা যার যার সাধ্যমতো ভালো আমল করে আমরা আল্লাহর কাছে তওবা করতে পারি। আর পরদিন একটি রোজা রাখতে পারি। মূলত এরাতটি হলো ক্ষমার রাত, মুক্তির রাত, গুনাহ মাফের রাত। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন!
বিস্তারিত জানার জন্য লেখকের লেখা বই তারাবির নামাজ ২০ রাকাআত কেন পড়তে পারেন।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট ও মুহাদ্দিস ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ বসুন্ধরা ঢাকা।
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        