ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি বছরের শীত মৌসুমে দেশে কোনো তাফসির মাহফিল করবেন না বলে জানিয়েছেন ইসলামিক স্কলার, গবেষক ও আলেম ড. মিজানুর রহমান আজহারী। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানান।
মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, গত বছর দেশব্যাপী আটটি বিভাগে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, প্রতিটি প্রোগ্রাম বেশ শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। পবিত্র কোরআনের দুর্বার আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা জনতার উপচে-পড়া ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। লাখো মানুষের এসব জমায়েত সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী মাঠপর্যায়ে যে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন, তা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসার দাবিদার।
মিজানুর রহমান আজহারী আরও বলেন, বর্তমানে সারা দেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি আমেজ তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভাষ্যমতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা। নানা কারণে আসন্ন নির্বাচন আমাদের জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইতোমধ্যে প্রায় সব রাজনৈতিক দল খুব জোরেশোরে তাদের সভা-সমাবেশ ও প্রচারণা কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে তাদের মহাসমাবেশগুলো অনুষ্ঠিত হবে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এসব মহাসমাবেশগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করতে হবে।
জনপ্রিয় এই ইসলামিক আলোচক বলেন, এমতাবস্থায়, আমাদের পক্ষ থেকে নতুন কোনো প্রোগ্রামের আয়োজন তাদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতা ছাড়া একেকটা তাফসির মাহফিলের বিশাল জনস্রোত সামলানো মুশকিলের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। জাতীয় স্বার্থে নির্বাচনের ঠিক আগমুহূর্তে আমাকে ঘিরে এ ধরনের বড় তাফসির প্রোগ্রাম আয়োজন যুক্তিযুক্ত হবে বলে মনে করছি না। তাই, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়—উন্মুক্ত মাঠে অনুষ্ঠেয় আমার এ বছরের বিভাগীয় সব তাফসির মাহফিল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নির্বাচন-পরবর্তী স্থিতিশীল পরিবেশে তাফসিরুল কোরআনের ঐতিহাসিক প্রোগ্রামগুলোতে আমরা আবারও মিলিত হব ইনশা-আল্লাহ।
মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ইতোমধ্যে অনেকেই হয়ত হাসানাহ ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে জেনেছেন। শিক্ষাখাতে জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে এ বছরই যাত্রা শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান হিসেবে সদ্য গড়ে তোলা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমে অধিক সম্পৃক্ত হওয়া এ মুহূর্তে অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, বর্তমানে ফাউন্ডেশনের কাজেই পুরোপুরি আত্মনিয়োগ করতে হচ্ছে। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। হাসানাহ ফাউন্ডেশনের জন্য সবার আন্তরিক দোয়া প্রত্যাশা করছি।