ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের জন্য মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে, তিনি দুই দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাবও দিয়েছেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ৮০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে ভুটান প্রধানমন্ত্রী এই প্রস্তাব দেন। তিনি উল্লেখ করেন, ভুটানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ‘গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটি (জিএমসি)’ কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করলে উভয় দেশই ব্যাপকভাবে লাভবান হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস প্রস্তাবগুলোকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “উন্নত সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভুটান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন স্তরে নিয়ে যেতে পারে।”
ভুটান প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, তাদের দেশ ধর্মীয় পর্যটন উৎসাহিত করতে চায়। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরাই তাদের দেশে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছিলেন। এছাড়া ভুটান তার জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনা ভাগাভাগি করতে ইচ্ছুক এবং বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানির বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। ফাইবার অপটিক সংযোগ স্থাপনে বাংলাদেশের সমর্থন চাওয়াও তার প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত।
দুই নেতা রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা করেন। ভুটান নিশ্চিত করেছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা অংশ নেবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী তোবগে তাকে ‘রোল মডেল’ উল্লেখ করেন এবং ‘মাই প্রফেসর’ হিসেবে সম্বোধন করেন। তিনি গত ৯ সেপ্টেম্বর থিম্পুতে নবনির্মিত বাংলাদেশের নতুন চ্যান্সারি ভবনের নকশাও প্রশংসা করেন, যা ‘হিমালয়ের পাদদেশে বঙ্গোপসাগর’ থিমে তৈরি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেরিং তোবগে জানান, বাংলাদেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচনের আগে তিনি সম্ভবত সফর সম্পন্ন করবেন।
এনএইচ/