|| মাসউদুল কাদির ||
সাহিত্য সাংবাদিকতা কোর্স একটি ধারণা মাত্র। এ কোর্স এমন কোনো মেশিন নয় যে কাউকে কথাসাহিত্যে এক চান্সে যোগ্য করে গড়ে দেবে।
তবে এ কর্মশালা অবশ্যই কাউকে এই সাহিত্যের পথে চলবার জন্য অগ্রসর করে দেয়। নিয়মতান্ত্রিক সাহিত্য সভাগুলোতে অ্যাটেন্ড করার কারণে দৃঢ়মন্থর গতিতে নিজের যোগ্যতা বাড়তে থাকে। তাই রাজধানীকে আমরা যদি চারটা ভাগে ভাগ করি, চারটি জোন বানাই, এই চার জায়গায় সমানভাবে সাহিত্য কর্মশালা যেমন হওয়া উচিত সাহিত্য সভাও হওয়া উচিত।
কওমি শিক্ষার্থীদের ভাড়া দিয়ে ঢাকার একদিক থেকে আরেক দিকে যাওয়া অনেক কঠিন। সময়ের যন্ত্রণা, যানজট, ট্রাফিক প্রবলেম- এসব তো আছেই। এ গুরু দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদের কিন্তু অনেকগুলো সংগঠন রয়েছে, তারা যদি কাজ বাড়িয়ে দেয়, তাহলে অনেক সহজ হয়। ইসলামি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর তত্ত্বাবধানেও এসব কর্মশালা বা সাহিত্য সভা হতে পারে। বড় বড় কওমি মাদরাসাগুলোর তত্ত্বাবধানেও হতে পারে।
আপনি হয়তো বলবেন, আমাদের মাদরাসায় তো আমরা নিয়মতান্ত্রিক এসব আয়োজন করে থাকি। নিঃসন্দেহে এটা ভালো উদ্যোগ। তবে একটি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে যে অনুষ্ঠান আর পাঁচটি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যকার অনুষ্ঠান এক নয়। দশটি মাদরাসার মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থীরা যখন একত্র হবে -তখন মেধার বিকাশ ঘটবে। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যয় গ্রহণ করতে পারবে। অনেকে বলে থাকেন যে আমরা তো ফেসবুকে খুব লিখছি, ডিজিটাল এই যুগে আসলে আমাদের একত্র হওয়ার বিকল্প নেই। একত্র হয়ে যে পরামর্শ আমরা করব, সাহিত্য নিয়ে ভাববো, সাহিত্য নিয়ে আমরা পড়াশোনা করব, নিজেদের মতামত ব্যক্ত করবো -এসবই একত্র হওয়ার উপকারিতা। একটা কিছু দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করে দিয়ে সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়।
রাজধানী দেশের মাথা। তাই রাজধানীতে আরও বেশি সক্রিয় হওয়া দরকার সাহিত্যমোদী ও সংস্কৃতিপ্রেমী কবি তরুণদের। নিজের গণ্ডির বাইরে এসে বেশি চর্চা বাড়ানো দরকার। সমাজকে দেখা দরকার কে কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা কতটুকু পিছিয়ে আছি। পাঁচজন একত্র না হলে আমরা তো বুঝতেই পারবো না- কে কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে? এগিয়ে যাবার সোপান কী? চিন্তার আদান-প্রদান, আদর্শের আদান-প্রদান এবং আমাদের রাজনৈতিক জ্ঞান ও পারদর্শিতা বাড়তে পারে। মাদ্রাসাগুলোর ভেতর থেকে আমাদের সজাগ সযত্ন মেধাবী তারুণ্যকে বের করে আনা দরকার। যারা সত্যিকার অর্থেই সমাজকে পরিবর্তনে কাজ করবে। যার ভেতরে মেধা আছে, প্রতিভা আছে, সাহস আছে সে হয়তো জানেই না।
এমন কিছু কর্মশালা বা সাহিত্য সভা এসব তারুণ্যকে বের করে আনতে সাহায্য করতে পারে। আগামীর বিশ্বকে নতুন করে সাজাবার জন্যই আমাদের এসব উদ্যোগ গ্রহণ করার জরুরি। যারা মাদ্রাসার অভ্যন্তরে, বাইরে বা বিভিন্ন জায়গায়, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এসব আয়োজন করছেন- তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনারা সামাজিক বিপ্লবের জিহাদে অংশীদার। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের কল্যাণ করুন, সফল করুন। আমিন।
লেখক: চেয়ারম্যান, শীলন বাংলাদেশ
এসএকে/