বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীল ও পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ভারত। তবে প্রতিবেশী এই দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নয়াদিল্লি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই কথা জানানো হয়েছে।
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, ভারত ও বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একমত যে বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত ‘পরিবর্তনশীল ও জটিল’।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা বোঝার জন্য একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ প্রয়োজন। কোনো দেশের গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনার সৃষ্টি হয়, যা সম্প্রতি তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আরও স্পষ্ট হয়েছে।”
বিবৃতিতে ভারত সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলা হয়, ভারত বাংলাদেশের চলমান প্রতিটি ঘটনাপ্রবাহের প্রতি সতর্ক নজর রাখছে। তবে সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দেশটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। মূলত শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটেই ভারতের এই অবস্থান সামনে এল।
বাংলাদেশের বিক্ষোভকারীদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ দিন ধরে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে। তাদের অভিযোগ, ভারত সরকার দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সদস্যদের আশ্রয় দিয়ে আসছে। বিশেষ করে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ভারতীয় যোগসূত্রের অভিযোগ তুলে শাহবাগে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না করার এই আশ্বাস দেওয়া হলো।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং জনআকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিতেই ভারত এমন সাবধানী অবস্থান গ্রহণ করেছে।
জেএম/