মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫ ।। ১১ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭


লেখকের মূল্যায়নে ‘আমাদের নবীজি’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সিরাতগ্রন্থ 'আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম'। এই গ্রন্থটি আমার লেখা। পৃথিবীর সব মানুষেরই মনে স্বপ্ন থাকে। কিছু স্বপ্ন মানুষ খুব যত্ন করে আদর করে লালন করে। হজরত নবীজি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনীগ্রন্থ লেখবার স্বপ্নটা ঠিক ওই রকম করে আমার মনের গভীরে দীর্ঘদিন লালিত হয়ে আসছে। কিন্তু সাহস করে সেটা শুরু করতে পারছিলাম না। আল্লাহর শোকর, সেটা শুরু করার পর, তারপর প্রকাশিত হয়ে সেটা এখন পাঠকের হাতে পৌঁছোবার অবস্থায় এসেছে। এজন্য আমি মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে শোকর আদায় করছি।

হজরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবন পৃথিবীর সকল সভ্য ভাষা সাহিত্যের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। আমাদের বাংলা ভাষায় নবীজি মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্পর্কে অনেক লেখা হয়েছে। এই লেখালেখিতে অংশগ্রহণ করতে পারাটা, এটা একটা সৌভাগ্যের জায়গা। প্রধানত, বলতে পারেন আমি এই সৌভাগ্যের কাফেলায় একটুখানি জায়গা পাওয়ার জন্য এই কাজটা করেছি। তারপরও পাঠকের মনে অবশ্যই প্রশ্ন থাকবে, আমার এই কাজটার ধরন কী? চরিত্র কী? যদি খুব সহজ ও ছোট করে বলি, তাহলে আমি বলতে পারি যে, প্রিয়তম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের প্রতিটি হরফ আলোকিত এবং ফুলের মতো গন্ধময়। তাই আমি আমার দীর্ঘ ৩০-৩২ বছরের লেখালেখির যে অভিজ্ঞতা, লিখতে গিয়ে আমার যে পাঠ চর্চা, আমার সামান্য যেই সঞ্চয় সংগ্রহ ও সাধ্য তার সবটা নিংড়ে যে সুন্দরটা, সে সুন্দরটা দিয়ে আমি তৈরি করবার চেষ্টা করেছি 'আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম' নামের গ্রন্থটা।

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লিখতে গিয়ে আমি চেষ্টা করেছি আমার কলম যেন মুখস্থ না চলে। আমি বেছে বেছে তাজা ফুলের মতো শব্দগুলোকে আহরণ করার চেষ্টা করেছি। বাক্য নির্মাণ করার চেষ্টা করেছি এমনভাবে, যেন তাতে আতরের সৌরভ থাকে। আবার কথা বলতে গিয়ে আমি চেষ্টা করেছি, আমাদের সিরাত সাহিত্যের যে মূল ও মানিত উৎস, যেন কথাগুলো সেখান থেকে উঠে আসে। যেন কথায় কোনো খাদ না থাকে। ভিত্তিহীন কোনো কথা এসে যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র জীবন সৌন্দর্যকে আহত না করে।

সেই সঙ্গে একটা অভিজ্ঞতা আছে পাঠক হিসেবে আমার। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে লিখিত বাংলা ভাষায় এমন অনেক বই আছে, যা যদি হয় ভাষার বিচারে অত্যন্ত চমকপ্রদ, তো তথ্যের জায়গা থেকে সেটার জায়গায় জায়গায় হোঁচট খেতে হয়। একই সঙ্গে তথ্যের বিচারে অত্যন্ত শক্তিমান এমন অনেক গ্রন্থ আছে, ভাষার বিচারে যা এতটাই খসখসে যে, পাঠক বেশিদূর এগোতে পারে না। আমি চেষ্টা করেছি, এই দুটোর সমন্বয় করবার জন্য। ভাষা যেন সুন্দর হয়, প্রাঞ্জল হয়, সাবলীল হয় এবং সেটা যেন গল্প উপন্যাসের মতো পাঠককে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। কতটা সফল হয়েছি, সে বিচার আপনি করবেন। আপনারা করবেন। আমি উপমা হিসেবে গ্রন্থের শুরু মাঝখান ও শেষ দিক থেকে কয়েকটি লাইন আপনাদেরকে পাঠ করে শোনাতে পারি।

বইয়ের সূচনা করেছি এইভাবে, প্রথম শিরোনাম ‘সবার প্রিয় মুহাম্মাদ’।  'আমাদের নবীজির নাম মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি দেখতে ছিলেন ভারি মিষ্টি। একবার কেউ তাঁর দিকে তাকালে চোখ ফেরাতে পারতো না। তার চুলগুলো ছিল কালো, সামান্য কোঁকড়ানো। সিঁথি কাটলে ঢেউ খেলত মাথায়। নবীজির কপালখানা ছিল বড়। চোখ দুটো ছিল টানা এবং চোখের মনি ছিল কালো। দুচোখে ছিল জগতের সব মায়া। চোখের ভ্রু ছিল চিকন লম্বা আবার মিলিতও না। নাক ছিল একটু উঁচু। নাকের ডগায় সব সময় এক বিন্দু আলো ঝুলে থাকতো। হঠাৎ কেউ দেখলে ভুল করত। মনে করত, নবীজির নাসিকা বেশ উঁচু। তার দাড়ি ছিল মুখ ভর্তি ঘন। গাল দুটি ছিল নরম, ফুলের মতো। মুখ ছিল মানানসই বড়। দাঁতগুলো সমান, মাঝখানে ছিল সামান্য ফাঁক। যেন কেউ যত্ন করে মুক্তোর পর মুক্ত সাজিয়ে রেখেছে। যখন কথা বলতেন, দাঁতের ফাঁক থেকে আলো বের হতো। যখন খুশি হতেন, তার বদন রেখাগুলো জ্বলজ্বল করে উঠতো। যেন এক টুকরো চাঁদ। নবীজির গ্রীবাখানা ছিল রুপোর মতো উজ্জ্বল, পুতুলের মতো খোদাই করা। তার শরীর খুব ভরাট, বুক ও পেট সমান। সিনা প্রশস্ত, মেদহীন। বাহু দীর্ঘ, কাঁধ বিশাল। হাত পা মাংসল। হাত মখমলের মতো কোমল। পায়ের আঙ্গুলগুলো ছিল লম্বা। পায়ের তালু ছিল সামান্য গভীর। পায়ের পাতা ছিল পিচ্ছিল। পানি পড়া মাত্র গড়িয়ে যেত। গায়ের রঙ ছিল কমনীয়। দুধে আলতা মেশানো। বদনখানি ছিল পূর্ণিমার চাঁদের মতো জ্বলজ্বল করা। যারা তাকে দেখেছেন সবাই বলেছেন, তার আগেও এমন সুন্দর কাউকে দেখিনি, তার পরেও এমন সুন্দর কাউকে দেখিনি। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি দেখতে যেমন ছিলেন মিষ্টি, তার কথাও ছিল তেমনি মিষ্টি। আচরণ ছিল মধুর মতো। দূরের কাছের সবাই তাকে ভালোবাসতো। সকলের মুখে মুখে ছিল তার প্রশংসা। তার নাম মুহাম্মাদ। মুহাম্মাদ অর্থ, সবাই যার প্রশংসা করে।'

এইভাবে শুরু হয়ে তার জন্মস্থান মক্কা এবং তার মা, তার বাবা, মা হালিমা সাদিয়া, যেখানে তিনি দুধ পান করবার সময় চারটি বছর কাটিয়েছেন, সেখানকার পরিবেশ, সেখানকার বাড়িঘর, (পাহাড়ের কাঁধের উপরে মা হালিমার বাড়ি) আল্লাহর শোকর আমি সেখানে গিয়েছি। দেখে চিত্রটা তুলে আনবার চেষ্টা করেছি। তারপর ফিরে আসা মায়ের কাছে এবং সঙ্গে ওই গাছটির গল্প যেখানে  রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রথম শিক্কে সদর হয়েছিল। এভাবে মা হারানোর গল্প, দাদার বুকে ফিরে আসা, আবার দাদাকে হারানো, আবার চাচা আব্দুল মুত্তালিবের ঘরে আসা, চাচি ফাতেমা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর মা। সেই চাচিজানের অন্তহীন ভালোবাসা, এইসব কিছু ছাপিয়ে একসময় মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংসারে চাচার সঙ্গী হতে শুরু করেন। ব্যবসায় বসরা যান, ফিরে আসেন সেখান থেকে। এবং যখন তিনি ২০ বছর অতিক্রম করছেন, তখনই একজন সচেতন এবং উদ্যমী উদ্যোগী যুবক।

ব্যবসায় পুরো মক্কায় তার নাম হযরত খাদিজাতুল কুবরা রা. -এর পাশে আসা এবং পুরো মক্কায় আল আমিন হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করা, সালিশ হওয়া –এসব কিছু পার করে একটা সময়ে মক্কার সেই বিখ্যাত নূরের পর্বত 'জাবালুন নূরে'র কাঁধে ধ্যানমগ্ন হওয়া এবং নবুওয়াত লাভ করা তারপর এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। উত্তেজনা, আবেগ-ভালোবাসা, প্রতিরোধ-প্রতিবাদ, আগুন –এ সবকিছু অতিক্রান্ত করে তারপর তিনি পা রাখছেন পবিত্র মদিনায়।

সেই মদিনার অধ্যায়কে আমরা কিভাবে শুরু করেছি, সেখান থেকে আমরা পাঠককে সামান্য কিছু পাঠ করে শোনাচ্ছি, প্রথম শিরোনাম, ‘ভালোবাসার ফুলের মেলায় নবীজি’ 'কোবা, মদিনার উপকণ্ঠ।  শহর থেকে তিন মাইল দূরে। প্রতিদিন এখানে এসে ভিড় করেন সাহাবিরা। যেদিন থেকে খবর পেয়েছেন যে নবীজি মদিনায় আসছেন, ঠিক সেদিন থেকেই। যারা হজ করতে গিয়ে নবীজিকে দেখে এসেছেন, তাদের চোখে লেগে আছে নবীজির অনুপম বদনখানি। ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়ে, আহা! মানুষ এমন সুন্দর হয়! কি মায়া মাখা মুখ! কি মধুর কথা! ওই কথা বলেন তারা ঘরে বাগানে বন্ধুদের আড্ডায়। যারা দেখেননি তারা আরো আকুল। কবে আসবেন তিনি? যেদিন পা রাখলেন কোবায়, সেদিনের কথা। অন্য দিনগুলোর মতো নরম সূর্যটা সঙ্গে করে এসে দাঁড়িয়েছেন তারা শহরের বাইরে কোবায়। যতদূর চোখ যায় উঁকি মেরে দেখেন। এই দাঁড়িয়ে থাকেন, এই বসেন। ভেতরে ভালোবাসার ঢেউ। স্থীর থাকতে দেয় না। আস্তে আস্তে সূর্যটা উপরে উঠে যায়। মাটি পাথর বাতাস তেঁতে উঠতে থাকে। নাহ, আজো মনে হয় আর আসবেন না। তাই মনে হচ্ছে। চলো ঘরে ফিরে যাই। কাল আবার আসবো। তারা ঘরে ফিরে যান। এমন সময় এক ইহুদী তার বাড়ির ছাদের উপর থেকে প্রথম দেখতে পায় নবীজিকে। দেখামাত্রই চেঁচিয়ে ওঠে,, বনু কায়েলা কোথায়, ওই যে তোমরা যার অপেক্ষায় ছিলে, তিনি এসেছেন।

কোলাহলমুক্ত শান্ত পল্লী কোবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় আওয়াজ। কী কী বলে বেরোয় সবাই, নবীজি এসেছেন, নবীজি এসেছেন। অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বের হন আনসারীগণ দলে দলে। সশস্ত্র বাহিনীর মতো দাঁড়িয়ে যান যুবকের দল। ভালোবাসার ফুল ভরা বুকে দাঁড়িয়ে আছেন বুড়ো এবং শিশুরা। সঙ্গে আছেন পরম শ্রদ্ধায় আব্রুঢাকা নারীর দল। সবাই সালাম করছেন। যারা আগে দেখেননি তাদের কেউ কেউ চুল দাড়ি বেশি সাদা দেখে আবু বকরকেই নবী মনে করছেন।  আবু বকর দেখেন রোদটা বেশ কড়া হয়ে উঠেছে। উটের পিঠে নবীজির পেছনে দাঁড়িয়ে গায়ের চাদরটা ছড়িয়ে ধরেন নবীজির মাথার উপর। তখন সবাই বুঝতে পারেন, এ–ই আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সেদিন ছিল ১২ ই রবিউল আউয়াল, ৩১ শে মে ৬২২ ঈসায়ী সোমবার। নবীজি কোবায় ৪ দিন থাকেন সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার।'

এভাবে শুরু হয় মদিনার গল্প। তিনি মদীনায় আসেন। অন্তহীন ভালোবাসায় মদিনার লোকেরা নাহ ফুল বিছিয়ে না, বরং হৃদয় বিছিয়ে তারা বরণ করে নেন। কিন্তু মক্কার লোকেরা কি আর বসে থাকবার পাত্র। পাশে আছে বাঁদর ইহুদি দল। এই দুই দল মিলে এখানেও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামকে স্বস্তিতে থাকতে দেবে না যখন সিদ্ধান্ত, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও ঘুরে দাঁড়ান। তিনিও মুষ্টিবদ্ধ হন। হয় বদর অহুদ থেকে শুরু করে এক দিঘল যুদ্ধের ইতিহাস এবং বাঁদর ইহুদিদের শায়েস্তা করার পালা। চরম উত্তেজনা এবং ভালোবাসা একসঙ্গে মিলেমিশে বয়ে চলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ইতিহাস এবং এই ইতিহাস যেখানে এসে স্থির হয়, শেষটা করেছি আমি এইভাবে ‘দাফন–শেষ বিদায়’। 'আম্মাজানের ক্ষুদ্র ঘর। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে ভাগ হয়ে যাচ্ছেন আশেকান। প্রিয়তম নবীর সামনে দাঁড়িয়ে আদায় করছেন জানাযা। পা কি চলতে চায়? পিঁপড়ের গতিতে চলছে জানাযা। আজ বুধবার মধ্যরাত ১৪ ই রবিউল আউয়াল।

জানাজা শেষ। কবরে নামেন হযরত আলী, আব্বাসের দুই পুত্র ফজল ও কুসাম, নবীজির খাদেম শুকরান। বাইরে থেকে আউস ইবনে খাওলা ডেকে বলে, ওহে আলী! আল্লাহর দোহাই, নবীজির উপর আমাদেরও হক আছে। নেমে আসো, ডাকলেন। আউস নেমে যান কবরে। খাদেম শুকরানের হাতে একখানা চাদর। নবীজি চাদরটি গায়ে জড়াতেন, কখনো বিছিয়ে শুতেন, শয়ন করতেন। শুকরান এই বলে চাদরখানা কবরে বিছিয়ে দেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার পর এই চাদর আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। তারপর পরম ভালোবাসায় অন্তহীন শ্রদ্ধায় শুইয়ে দেন মদিনার পাক মাটিতে। যার মর্যাদা কাবা ঘরের চেয়েও বেশি। তখন বুধবার গভীর রাত। তখন সকল পুরুষ, পর্দার আড়ালের মহিলারা, আমাদের মায়েরা (আম্মাজান আয়েশা রাযিআল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছেন, যখন গভীর রাতে মাটি সমান করার আওয়াজ শুনতে পাই তখন বুঝতে পারি নবীজিকে দাফন করা হয়ে গেছে। মাটি সমান করার পর কবরের মাঝখানটা সামান্য উঁচু করে দেন, তারপর তাতে পানি ছিটিয়ে দেন নবীজির হৃদয়ের টুকরা সাইয়েদা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। মায়ের মতো মায়ের মমতা বাবার সোহাগ এইসব তিনি পেয়েছেন এই এক বাবা থেকে। যখন নবীজিকে দাফন করে বেরিয়ে আসেন আদরের খাদেম আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হযরত ফাতেমা তাকে ডেকে বলেন, আনাস! তোমরা খুশি মনে আল্লাহর রাসুলের উপর মাটি ছড়িয়ে দিতে পারলে? আনাস কিভাবে বলবেন, নাহ নাহ, খুশি মনে নয়। আমাদেরও বুক ফেটে যাচ্ছে। কিন্তু কি করব? এ যে আপনার বাবার শিক্ষা। এই শিক্ষার সামনে আমাদের সব আবেগ চির অবনত। আনাস কিছুই বলতে পারেন না। জল ভরা চোখে তাকিয়ে থাকেন। একা আনাস নয়,) সবার চোখেই পানি। অন্তহীন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় মনিবকে হারিয়ে শোকের সাগরে ভাসতে থাকে মদিনা। রাত কাটে ভোর হয়, বেলাল সেই আগের মতই আযান দেন। সবাই আসে নবীজি আসেন না।'

পেয়ারা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পুরো জীবনটাকে বিশুদ্ধ তথ্যে ভালোবাসার ভাষায় আমরা তুলে ধরবার চেষ্টা করেছি। আমাদের বিশ্বাস, আমাদের সন্তানরা যদি এই বইটি পড়ে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ভালোবাসা তারাও তাদের হৃদয়ে খুঁজে পাবে।

আমি সকলের প্রতি এই আবেদন জানাচ্ছি, পড়বার সময় নিজেদের জন্য যখন দোয়া করবেন, সেই দোয়ায় আমাদেরকেও স্মরণ রাখবেন।

শ্রুতিলিখন: আল আমীন বিন সাবের আলী, সদস্য, বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর