ইরাকে নিরাপত্তা হুমকি বেড়ে যাওয়ায় বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে অপ্রয়োজনীয় কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
বুধবার (স্থানীয় সময়) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা আমাদের সব দূতাবাসে কর্মীদের অবস্থান নিয়মিত মূল্যায়ন করি। সর্বশেষ বিশ্লেষণে, আমরা ইরাকে আমাদের দূতাবাসের জনবল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই পদক্ষেপের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনার কথা না বলা হলেও, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা স্থগিত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার জানিয়েছেন, তিনি এখন আগের চেয়ে অনেক কম আশাবাদী যে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করবে। এর আগে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে এক উত্তেজনাপূর্ণ ৪০ মিনিটের ফোনালাপে অংশ নেন, যেখানে ইরানের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “ওই অঞ্চলে এখন ঝুঁকি বাড়ছে, তাই আমরা কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছি। কী হয়, তা দেখা যাক।”
এদিকে, ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি আলোচনায় ব্যর্থতা আসে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামরিক হামলার নির্দেশ দেন, তাহলে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিগুলোর ওপর পাল্টা হামলা চালাবে।
রয়টার্স জানায়, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ—যেমন কুয়েত ও বাহরাইনে অবস্থানরত মার্কিন সামরিক পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা কংগ্রেসে বলেন, “আমরা এমন বেশ কিছু ইঙ্গিত পাচ্ছি, যা থেকে মনে হচ্ছে—ইরান এমন এক পর্যায়ে অগ্রসর হচ্ছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি।”
অন্যদিকে, ইরান দাবি করছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সম্পূর্ণ বেসামরিক শক্তি উৎপাদনের উদ্দেশ্যে, এবং তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না।
বুধবারই যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস সংস্থা সতর্কবার্তা দিয়ে জানায়, মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এই ঘোষণা সামনে আসার পরই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ৪% এর বেশি বেড়ে যায়, যা সরবরাহ হুমকির ইঙ্গিত দেয়।
বর্তমানে ইরাকে প্রায় ২,৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ।
সূত্রঃ বিবিসি
এনএইচ/