আমলকী একটি অসাধারণ ভেষজ ফল, যা ভিটামিন ‘সি’, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট (পলিফেনল, ট্যানিন, এলাজিটানিন) এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ। এটি শরীরের বার্ধক্যজনিত প্রক্রিয়াকে ধীর করে এবং খাবার গ্রহণের পর রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া রোধ করে। একই সঙ্গে আমলকী শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ কমাতেও সহায়তা করে।
আমলকী শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাসে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও এটি কার্যকর। তবে খালি পেটে বা অতিরিক্ত পরিমাণে আমলকী খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। তাই সকালে খালি পেটে অল্প পরিমাণ আমলকীর রস পানি মিশিয়ে পান করা যেতে পারে। কাঁচা আমলকীও সামান্য পরিমাণে খাওয়া উপকারী, তবে পরিমাণে সতর্ক থাকা জরুরি।
আমলকীর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ১৫, যা একে ডায়াবেটিস-বান্ধব ফল হিসেবে পরিচিত করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। যদিও এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, তবুও কোনোভাবেই এটি ওষুধের বিকল্প নয়। তাই খাদ্যতালিকায় আমলকী যুক্ত করার আগে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দীর্ঘমেয়াদি নিয়মিত সেবনে আমলকীর উপকারিতা ধীরে ধীরে অনুভব করা যায়। এটি তাৎক্ষণিকভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় না, তবে ইনসুলিনের কার্যকারিতা ও সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও পলিফেনল শরীরকে গ্লুকোজ আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সহায়তা করে এবং বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে, ফলে রক্তে অতিরিক্ত শর্করা জমতে পারে না।
আমলকী বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়—এর গুঁড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে, খাবারের সঙ্গে যোগ করে, বা শুকনো টুকরো ফুটিয়ে চা হিসেবেও পান করা যায়। স্বাদ বাড়াতে দারুচিনির মতো ডায়াবেটিস-বান্ধব ভেষজ মিশিয়েও আমলকীর চা তৈরি করা যেতে পারে।
এনএইচ/