সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৮ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
দেশ কীভাবে গণতন্ত্রের পথে হাঁটবে তা নির্ভর করছে আসন্ন নির্বাচনের ওপর: সিইসি গণভোটের বিষয়ে দলগুলো একমত না হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার  ইরানে ভয়াবহ খরা, তীব্র পানি সংকটের আশঙ্কা তেহরানে  পাঁচ দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিলো জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনসহ ৮ দল এক সপ্তাহের মধ্যে পরামর্শ জানাতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সরকারের আহ্বান নতুন প্রজন্মের জন্য 'ধূমপান' সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করল মালদ্বীপ জামায়াত ক্ষমতায় আসলে কওমি ও সুন্নিদের অস্তিত্ব থাকবে না: মহিবুল্লাহ বাবুনগরী ঢাকায় ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়ায় আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকর্মী আটক ‘আমি তোমাদের মায়ের বয়সী’ বলে কাঁদলেও ধর্ষণ থেকে রেহাই পাননি সুদানি নারী ৬ মাসে হাফেজ হলেন ৯ বছর বয়সী হাসান

সরোয়ার-মাহতাবকে প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনা: ২৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের উদ্বেগ


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

সৈয়ব আহমেদ সিয়াম (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়)

দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎসকে প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের ২৫০ জন শিক্ষক উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে বিবৃতি প্রদান করেছেন।

রবিবার (১৭ আগস্ট ২০২৫) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাফওয়ান চৌধুরী রেবিল নামের এক ব্যক্তি ‘Antarctica Chowdhury’ নামে পরিচালিত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আইইউবি-এর সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লেকচারার আসিফ মাহতাব উৎস-এর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে দুই শিক্ষকের শিরচ্ছেদকৃত মাথা ও বিকৃত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ছবি ব্যবহার করে পোস্ট করা হয়, যা সরাসরি হত্যার উস্কানি প্রদান করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ কর্মকাণ্ড কেবল ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্যই নয়, দেশের সামাজিক স্থিতি, আইনের শাসন ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্যও ভয়াবহ হুমকি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ধারা ২৬ এবং দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ৫০৩ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ঘটনায় দুই শিক্ষক থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

শিক্ষকরা বলেন, ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন একজন খ্যাতিমান লেখক, সমাজসেবক ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষক, যিনি দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া, ডেঙ্গু ও শিশুদের স্থূলতা বিষয়ে গবেষণা ও সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। অন্যদিকে, আসিফ মাহতাব উৎস নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা পালন করেছেন। তারা উভয়েই সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় অবিচল থেকেছেন।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, একজন চরমপন্থী কর্তৃক দেশের দুইজন সুপরিচিত শিক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার প্ররোচনা দেওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং সভ্য সমাজে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এ ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হতে পারে, যা দেশের স্থিতিশীলতাকে ব্যাহত করতে পারে।

শিক্ষকরা জানান, অভিযুক্ত সাফওয়ান চৌধুরী রেবিল—যিনি নিজেকে সাহারা চৌধুরী নামে পরিচয় দিয়ে ট্রান্সনারী হিসেবে উপস্থাপন করতেন—সিলেটের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। হত্যার প্ররোচনার বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে। তবে এটি যথেষ্ট নয়, তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

শিক্ষকরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান—অবিলম্বে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের নিন্দনীয় কাজে কেউ জড়ানোর সাহস না পায়।

২৫০ জন শিক্ষকের এ বিবৃতিতে রয়েছেন ৭৫ জন প্রফেসর, ৪৪ জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, ৬৫ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এবং ৬৬ জন লেকচারার। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন, সাস্টের ১৬ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন, বুটেক্সের ১৪ জন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন, বুয়েটের ২ জন ও বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ১২ জনসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক রয়েছেন।

বিস্তারিত তালিকা www.mullobodh.com ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম, বুটেক্সের অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল ইসলাম, ডুয়েটের অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, সাস্টের অধ্যাপক শামীমা তাসনীম, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আরিফ মোর্শেদ খান, মেডিকেল কলেজ ফর ওমেন অ্যান্ড হসপিটালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মিলিভা মোজাফফর, বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক ইফতেখারুল ইসলাম ইমন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খোঃ লুৎফুল এলাহী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী প্রমুখ।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ