ইসকনসহ যেকোনো সংস্থার ভূমিকা বা অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ যদি অপরাধে সহায়তার প্রমাণ মেলে, তবে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জড়িত থাকলে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ইন্তিফাদা বাংলাদেশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সংগঠনটি ছয় দফা দাবি তুলে ধরে। সমাবেশ শেষে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বায়তুল মোকাররম থেকে শাপলা চত্বর অভিমুখে একটি সংক্ষিপ্ত মিছিল বের করেন। সমাবেশে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে নারী নির্যাতন, অপহরণ, হত্যা ও ইসলামবিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় সমাজে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের দ্রুত বিচার এবং মুসলিম নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিও জানায় সংগঠনটি। ইন্তিফাদা বাংলাদেশের নেতাদের মতে, গাজীপুরে ধর্ষণ ও টঙ্গীতে অপহরণ-হত্যার ঘটনাগুলো প্রশাসনিক উদাসীনতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফল। তারা মনে করেন, ভুক্তভোগীদের দোষারোপের প্রবণতা বন্ধ করে পুলিশ ও প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। সমাবেশে বক্তারা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামবিদ্বেষ ও কাঠামোগত বৈষম্য রোধে জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা বলেন, মুসলিম নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষায় নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ইসলামবিদ্বেষবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ইমাম, নাগরিক ও সংগঠনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। ইন্তিফাদা বাংলাদেশ মনে করে, দেশে বারবার ইসলামবিদ্বেষী ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা উদ্বেগজনক। সংগঠনটি দাবি জানায়, ইসলাম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের অবমাননার ঘটনা রোধে কার্যকর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দাবির মধ্যে প্রথমেই সংগঠনটি জানায়, ইসকনসহ যেকোনো সংস্থার ভূমিকা বা আর্থিক অংশগ্রহণ যদি অপরাধ বা সহায়তার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং দায় প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। দ্বিতীয় দাবিতে বলা হয়, গাজীপুরে সাম্প্রতিক ধর্ষণ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ বিভাগকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ভুক্তভোগীকে দোষারোপের প্রবণতা বন্ধ করে পুলিশ ও প্রশাসনের আচরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয় দাবি হিসেবে সংগঠনটি টঙ্গী এলাকার অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত চালিয়ে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানায়। চতুর্থ দাবিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামবিদ্বেষ ও কাঠামোগত বৈষম্য রোধে একটি জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কথা বলা হয়। তাদের মতে, ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষমূলক আচরণ বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা জরুরি। পঞ্চম দাবিতে মুসলিম নারীর সম্মান ও নিরাপত্তা রক্ষায় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। তারা মনে করেন, সমাজে নারী নির্যাতন ও ধর্মীয় বৈষম্যের ঘটনা বেড়ে চলায় এর প্রতিরোধে স্পষ্ট আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। ষষ্ঠ দাবিতে ইসলামবিদ্বেষবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ইমাম, নাগরিক ও সংগঠনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়। আরএইচ/